‘চব্বিশের কথা বলতে গিয়ে একাত্তরকে আলাদা করা বিশ্বাসের বিকৃতি’

চব্বিশের কথা বলতে গিয়ে একাত্তরকে আলাদা করা হলে তা বিশ্বাসের বিকৃতি করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ডা. সারওয়ার আলী। তিনি বলেছেন, ‘এটা করা যাবে না। এই সত্যকে উপলব্ধি করতে হবে।’

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ‘ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টে’র আয়োজনে এই আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে  ডা. সারওয়ার আলী বলেন, ছাত্র-জনতার ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে। মুক্তিযুদ্ধে জনগণের আকাঙ্ক্ষার ঘাটতি পূরণের সেই প্রয়াস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এবার প্রকাশ পেয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যদি চিকিৎসার জন্য আপনি ১০০ টাকা ব্যয় করেন, এর ৭৪ টাকা আপনার পকেট থেকে যাবে। অর্থাৎ রাষ্ট্রব্যবস্থা তার দায় অস্বীকার করেছে। রাষ্ট্র বাজার ব্যবস্থার ওপর স্বাস্থ্যকে সমর্পণ করেছে।’

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’র সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধকে ‘স্থিত সত্য’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘এসবই সত্য ঘটনা। যারা একে ধরে নাড়া দিতে চান তারা নিজেরাই নড়ে যাবেন। দয়া করে অন্যদিকে চোখ ঠেকান।’

ডক্টরস প্লাটফরম ফর পিপল'স হেলথের মহাসচিব অধ্যাপক শাকিল আখতার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা যে সম্মান করি, আর যে অসংখ্য নারী পুরুষ নির্যাতিত হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের যে আমরা স্মরণ করি; এই ব্যাপারে আমরা কোনও কম্প্রোমাইজ করবো না। যদি কেউ এটাকে অবমূল্যায়ন করতে চায় তা আমরা প্রতিরোধ করবো। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে প্রগতিশীল ধারার সূচনা হয়েছিল, আমাদের মনে হয়েছে সেটা এখন আশঙ্কার মধ্যে পড়ছে। কারণ বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রমূলক কাজও দেখা যাচ্ছে। যেকোনও সমস্যা যেটা বাংলাদেশের সামনে আসবে আমাদের ছাত্র জনতা সেটাকে প্রতিহত করবে। তবে এটা করতে যেয়ে যেন আমরা ভুল রাস্তায় না যাই।’

‘মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করা এটা আমরা সহ্য করবো না’, উল্লেখ করেন তিনি।
   
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টর সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম আবু সাঈদ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এম এইচ ফারুকী। আলোচনা শেষে একটি পুতুল নাচ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ইনভেস্টর'স পাপেট এর পরিবেশনায় পতুল নাচে দুটি চরিত্র বিজয় ও মুক্তি- এ দুজনের কথোপকথনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাসের পরিবর্তনে সত্য ইতিহাস জানার দিকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়।