শতভাগ সমর্পিত পেনশন পুনঃস্থাপনের বয়সসীমা ১৫ বছর থেকে ৫ বছর কমিয়ে ১০ বছর করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে পেনশন বৈষম্য দূরীকরণ পরিষদ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘পেনশন বৈষম্য দূরীকরণ পরিষদ’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী গ্রুপের সভাপতি নজরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, ‘১৫ বছরে পেনশন পুনঃস্থাপনের সুবিধা পেতে হলে একজন পেনশনারকে কমপক্ষে ৭৩ অথবা ৭৫ বছর বেঁচে থাকতে হবে। আমাদের বর্তমান গড় আয়ু ৬৯.৬ বছর। একজন পেনশনার ৭৫ বছর বেঁচে থেকে পেনশন পুনঃস্থাপনের সুবিধা পেলেও তিনি কতদিন তা ভোগ করতে পারবেন সেটিও বিবেচনায় আনা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন পুনঃস্থাপন হওয়ার একদিন আগেও যদি তিনি মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে তার পরিবার পেনশনপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে, যৌক্তিক কারণেই পেনশন পুনঃস্থাপনের সময়সীমা পরিবর্তন করা হলে উপকারভোগীর সংখ্যা অনেকটা বাড়বে এবং তারা জীবনের শেষ কিছুদিন আর্থিক নিরাপত্তার সুযোগ পাবেন।’
শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী গ্রুপের সভাপতি আরও বলেন, ‘অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস বিভাগের হিসাব অনুযায়ী শতভাগ পেনশন সমর্পণ না করে কেউ মাসিক পেনশন ভোগ করলে সমর্পিত পেনশনের আসল টাকা ৬ বছর ৭ মাস এবং সুদসহ আসল ৮ বছর ১১ মাসে সমন্বিত হয়ে যায়। সঞ্চয়পত্র ও এফডিআরের মুনাফার হার ক্রমাগত হ্রাস, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি, ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমরা পেনশনাররা আর্থিকভাবে সংকটাপন্ন। বিশেষ করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পেনশনভোগীদের শতকরা ৮০ ভাগই তারা।’
চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পেনশনাররা সবাই প্রবীণ। রোগব্যাধি তাদের নিত্য সহচর। জরা ও বার্ধক্য তাদের দ্রুত গ্রাস করে। বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী অনিরাময়যোগ্য রোগে আক্রান্ত হন তারা। তাই চিকিৎসাভাতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরি।’
এ সময় তিনি তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো গুলো হলো- শতভাগ সমর্পিত পেনশন পুনঃস্থাপনের বয়সসীমা ১৫ বছর থেকে ৫ বছর কমিয়ে ১০ বছর করতে হবে, নতুন ও পুরাতন স্কেলের পেনশনারদের পেনশন বৈষম্য দূরীকরণে ‘এক পদ এক পেনশন’ চালু করতে হবে, কর্মরত গণকর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতাসহ পেনশনারদের চিকিৎসাভাতা বৃদ্ধি করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কল্যাণ সমিতির মহাসচিব আবু আলম খান, সহ-সভাপতি কৃষিবিদ ড. শহিদুল ইসলাম, শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. ইনতাজ আলী প্রমুখ।