‘গ্রাহক সেজে ব্যাংকে ঢোকে ডাকাতরা, কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি’

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় গ্রাহক সেজে প্রবেশ করেছিল ডাকাত সদস্যরা। পরে তারা যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। এঘটনায় ব্যাংকের কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেছেন রূপালি ব্যাংকের ঢাকা বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ইসমাইল হোসেন শেখ।

আটক তিনজন ডাকাত সদস্য খেলনা পিস্তল দিয়ে ম্যানেজারকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করেছিল উল্লেখ করে ইসমাইল হোসেন শেখ বলেন, ব্যাংকের টাকা-পয়সা বা জনগণের কোনও আমানতও খোয়া যায়নি। এটা রাষ্ট্রীয় ব্যাংক। আগামী রবিবার থেকে ব্যাংকের এই শাখায় আবার আগের মতো লেনদেন হবে।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে ব্যাংক পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

রূপালী ব্যাংকের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ডাকাতির ঘটনার সময় ব্যাংকে মোট ৬ জন গ্রাহক ছিলেন। তারা নিরাপদে আছেন। আর ব্যাংকের ছিলেন সাতজন অফিসার, একজন পিওন ও দুজন ফায়ার গার্ড। ব্যাংকের ভেতরে থাকা সবাই সুস্থ আছেন। ব্যাংকের সব টাকা গুনে দেখা হয়েছে, এক টাকাও খোয়া যায়নি। তিন ডাকাত মূলত অস্ত্র দিয়ে ম্যানেজারকে জিম্মি করে টাকা লুট করতে এসেছিল। গ্রাহক সেজে তারা ব্যাংকে প্রবেশ করেছিল।

এরআগে দুপুর সোয়া ১টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের জিনজিরা শাখা রূপালি ব্যাংকে অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের জিম্মি করে ডাকাত দলের সদস্যরা। পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ডাকাত সদস্যরা আত্মসমর্পণ করে। পরে তাদের আটক করে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, ডাকাত দলের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের আত্মসমর্পণে রাজি করানো হয়। ডাকাতরা অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। বিকাল ৫টার দিকে প্রথমে তারা একটি বন্দুক জানালা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে একটি ব্যাগে ভরে আরও দুটি অস্ত্র বাইরে ফেলে দেয় তারা। এরপর একে একে ডাকাত সদস্যরা বেরিয়ে আসে। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তিন ডাকাতকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডাকাতরা চিরকূটের মাধ্যমে নিজেদের মোবাইল নম্বর দিয়েছিল। সেই নম্বরে ডাকাতদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আটক ডাকাতদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকাতদের বিস্তারিত পরিচয় জানানো হয়নি। এ ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ডাকাতদের নিয়ে যাওয়ার সময় র‌্যাব-১০ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল হাওলাদার বলেন, ‘পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ব্যাংকের ভেতরে গিয়ে আমরা ডাকাতদের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করেছি। পরে আমাদের কথায় সাড়া দিয়ে ভেতরে থাকা তিন জন ডাকাত দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছে।’