দক্ষ জনশক্তি রফতানিতে ৩ মিলিয়ন ইউরোর প্রকল্প শুরু

ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ৩ মিলিয়ন ইউরোর ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রকল্প আনুষ্ঠানিভাবে যাত্রা শুরু করলো। এটি শ্রমিকদের দক্ষতার ঘাটতি মোকাবিলা করবে, অভিবাসন খরচ কমাবে, বাংলাদেশে শ্রম অভিবাসনে ইচ্ছুক জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ বাড়াবে— যাতে ইইউ শ্রম বাজারের জন্য দক্ষ কর্মী সরবরাহ করবে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই প্রকল্পের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

 আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) তিন বছরে ২০২৪-২৭ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ আইনি অভিবাসনের পথ এবং অনিয়মিত অভিবাসন কমানোর ওপর জোর দিয়ে— প্রকল্পটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শ্রম বাজারে বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে। প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামগুলো ইইউতে কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা পূরণের জন্য প্রাথমিকভাবে ৩ হাজার কর্মীকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যে কাজ করবে। এছাড়া, প্রকল্পটি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে চাকরি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত করে তুলবে। দক্ষ চাকরি প্রার্থীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগে এই উদ্যোগগুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

সম্ভাব্য বিদেশি কর্মীরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর সম্মুখীন হয়— তা মোকাবিলার গুরুত্ব স্বীকার করে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমরা মূলত বিদেশে আনস্কিল্ড কর্মী সরবরাহ করে থাকি। অদক্ষ কর্মীদের অনেক ঝুঁকি থাকে, তারা পারিশ্রমিক কম পান। যেকোনও দেশের উন্নয়নে দক্ষ কর্মীদের পাঠানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হয়। দক্ষ কর্মী বাইরে পাঠাতে আমাদের ঘাটতি ছিল। এই ঘাটতি পূরণ করার জন্য অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। টেলেন্ট পার্টনারশিপের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা।

তিনি আরও বলেন, আমরা দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে চাচ্ছি যাতে করে নিরাপদ অভিবাসন বাড়ে। এতে করে কর্মীরা ভালো থাকবে, তারা ঠকবে না। এই প্রকল্প সফল হলে আমরা বিপুল পরিমাণ দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে পারবো।

আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন দক্ষতা উন্নয়নের ওপর প্রভাবকে গুরুত্ব দিয়ে বলেন, এটি প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়ন এবং ন্যায্য নিয়োগকে সহজতর করার লক্ষ্যে কাজ করবে।

বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এবং প্রধান প্রতিনিধি মাইকেল মিলার বলেন, ইইউ- বাংলাদেশ ট্যালেন্ট পার্টনারশিপকে সবার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন, অভিবাসী শ্রমিকের মানবাধিকার ও সম্মান নিশ্চিত করবে। আইনি অভিবাসনের পথ তৈরির পাশাপাশি, আমাদের অনিয়মিত অভিবাসন শেষ করতে এবং পাচার ও শোষণের দুর্ভোগ মোকাবিলা করতে কাজ বাড়াতে হবে।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন।