‘কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে’ 

কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে। নয়তো নারী শ্রমিকদের ঝরে পড়া কমানো যাবে না। সকল প্রকার হয়রানি ও সহিংসতা প্রতিরোধে কর্মক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন, প্রয়োগ, আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষরসহ সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সমাজে নারীর যে অবমূল্যায়ন হচ্ছে তা প্রতিহত করতে না পারলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ দুরূহ হয়ে পড়বে।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপন উপলক্ষে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ এর উদ্যোগে 'আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর এবং কর্মক্ষেত্রের যৌন হয়রানি ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন' শীর্ষক একটি গোল টেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব বলেন।

সলিডারিটি সেন্টারের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এ কে এম নাসিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ।

শ্রম সচিব বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন করা হলেও অভিযোগ প্রাপ্তি অপ্রতুল হওয়ায় সেখানে যৌন হয়রানির অবস্থা কি এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারনা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকার আইনি প্রক্রিয়ায় যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আরও ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করবে। দ্রুততম সময়ে 'আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষরে আশাবাদী বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাইকোর্টের নির্দেশনার বিষয়টি যথাযথভাবে অনুসরন করা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে মনিটরিং থাকা জরুরী। সরকারী চাকরীতে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস হলেও তৈরী পোশাক শিল্পে ১২০ দিন, যা বৈষম্যের প্রতিফলন।

শুধু শারীরিকভাবে যৌন হয়রানি নয়, বরং মানসিক ও মনস্তাত্বিক যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কর্মক্ষেত্রে ব্র্যান্ড, বায়ার, শ্রমিক-মালিক সহ সকল পক্ষকে সচেতন হতে হবে। শুধু আইন প্রণয়ন করলেই হবে না, বরং তা সঠিকভাবে বাস্তবায়নে এগিয়ে আসা জরুরী। তৈরী পোশাক শিল্পে কর্মক্ষেত্র নিরাপত্তা যথেষ্ট হলেও নারীর প্রতি যৌন হয়রানির বিষয়ে মন মানসিকতা পরিবর্তন করা জরুরী। এ ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে সক্ষমতা জোরদার করতে হবে।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, সবুজের অভিযান এর নির্বাহী পরিচালক মাহমুদা আক্তার, নারীপক্ষের রওশন আরা, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ এর মরিয়ম নেসা, ফ্ল্যাড এর মারুফুল আলম, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ এর শেখ শাহনাজ, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির তাসলিমা আক্তার, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের খাদিজা আক্তার।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহকারী পরিচালক ইশরাত জাহান রিকতা, চিবো ব্র্যান্ড এর ফাতেমা চৌধুরী, ফ্যাশন ব্র্যান্ড এর সাবিহা আক্তার, আইএলও'র আফসানা আক্তার, সলিডারিটি সেন্টার এর অনিন্দিতা ঘোষ, বহ্নিশিখা'র তাশরাফি হোসেন, মন্ডিয়াল এফএনভি'র কনসালটেন্ট শাহীনুর রহমান সহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, ব্র্যান্ড, মালিক সংগঠনের প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন নারী শ্রমিক।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্কপ প্রতিনিধি ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সাধারন সম্পাদক শহীদুল্লাহ বাদল, বিজিএমইএ-এর সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, ফাতেমা চৌধুরী, সিনিয়র ম্যানেজার, চিবো। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার এবং ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বিলস এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন।