উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ করে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেছেন, আপনারা গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে কাজ করুন। আপনাদের ওপর কি কেউ বন্দুক ধরে রেখেছে? আপনারা ভয় পাবেন না, আপনারা নির্ভয়ে কাজ করুন। আমরা আপনাদের ব্যর্থ হতে দেবো না।
বুধবার (২০ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা আয়োজিত ‘ফ্যাসিবাদের কফিন মিছিলের’ আগে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘দুই হাজারের বেশি শহীদ ও ৫০ হাজারের বেশি আহতের চাওয়াকে আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে? তবে কেন ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে? পুরনো জঞ্জালকে বিদায় করে যখন রাষ্ট্র গঠনের সুযোগ এসেছে, তখন আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর জাতীয় পার্টির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলো হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা তাদের নিয়ে নির্বাচন করতে চায়।’
উপদেষ্টা পরিষদ গঠনে কীভাবে নিয়োগ হচ্ছে, সে বিষয়ে ছাত্র-জনতা জানতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার নিয়োগ প্রক্রিয়া জাতির সামনে পরিষ্কার করুন। আপনারা কাদের মেন্ডেট নিয়ে উপদেষ্টা হয়েছেন? যদি আন্দোলনে শহীদদের ম্যান্ডেট নিয়ে হয়ে থাকেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করছেন বলে মনে করে; তাহলে জেনে রাখুন শহীদদের ম্যান্ডেট হলো আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
এখনও নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ‘শহীদদের খুনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়নি। শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা হয়নি। আহতদের চিকিৎসা সেবা যথাযথভাবে দেওয়া হচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আপনারা কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা আমাদের জানান।’
এ সময় তিনি কয়েকটি দাবি উত্থাপন করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ তাদের দোসররা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তাদের ব্যানারে নির্বাচনকারীরা স্বতন্ত্রভাবেও নির্বাচন করতে পারবে না। গণহত্যাকারী কর্মকর্তাদের ডিভিশন বাতিল করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য পরিষ্কার করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা যদি মনে করেন আওয়ামী লীগকে এ দেশের জনগণ ফেরত চায়, তাহলে তাদের নিয়ে গণভোটের আয়োজন করুন। তার সঙ্গে আরেকটি বিষয় যোগ করুন, যারা তাদের চায়, তাদেরও আগামী নির্বাচনে সাধারণ মানুষ চায় কিনা।’
সমাবেশে ছাত্র নেতা জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘আমরা নতুন বাংলাদেশের একশ’ দিন পার করছি। আমরা দেখছি ফ্যাসিবাদীরা উঁকিঝুকি দিচ্ছে, মন্ত্রণালয়ে তারা ঘোরা-ফেরা করছে, উপদেষ্টা পরিষদে অংশগ্রহণ করছে। আমরা তাদের প্রতিহত করবো। আমরা নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের শপথ নিয়েছি। সে ধারা অব্যহত রাখতে হবে।’
সমাবেশ শেষে টিএসসি থেকে কফিন মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তারা– ফ্যাসিবাদের পতনে, ভয় করি না মরণে; ফ্যসিবাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; আবু সাইদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ ইত্যাদি শ্লোগান দিতে থাকেন।