বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিসঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক (বিবিডিএন) এবং এসএমই ফাউন্ডেশন (এসএমইএফ) প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক সেবার প্রবেশগম্যতা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশগম্য পণ্য উন্নয়ন, অ্যাডভোকেসি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা। এই উদ্যোগটি সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা নিশ্চিত করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রবিবার (২৭ অওেক্টাবর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তথ্য জানান হয়।
এমওইউ সইয়ের আগে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিভিন্ন উদ্যোগ অর্থায়নের বিষয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘প্রোগ্রেস’ প্রকল্পের সহায়তায় এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এই ইভেন্টে এসএমই ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, এনআরবিসি ব্যাংক এবং পিকেএসএফ ও সাজিদা ফাউন্ডেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। তারা তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ওপর আলোচনা করেন।
সিআরপি’র মহবুবুল ইসলাম প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক পণ্য উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেন। এছাড়া, সাইটসেভার্স এসএমই নীতির বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন প্রতিবন্ধী উদ্যোক্তা সরাসরি তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তারা জানিয়েছেন— যোগ্য ও সজ্জিত হওয়া সত্ত্বেও ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ঋণ এবং আর্থিক সহায়তা পেতে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইএলও প্রোগ্রেস প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার পিটার বেলেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, বিবিডিএনের ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী এবং বিবিডিএনের সিইও মুর্তাজা রফি খান।
প্রধান অতিথি আনোয়ার হোসেন চৌধুরী তার বক্তৃতায় বলেন, এসএমইএফ এবং এর বিস্তৃত নেটওয়ার্ককে বাস্তবায়নের প্রতিটি পর্যায়ে সক্রিয়ভাবে জড়িত হতে হবে। তিনি বলেন, আমরা অনেক তাত্ত্বিক আলোচনা করেছি এবং বিস্তর গবেষণা পরিচালনা করেছি। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। আমাদের প্রচেষ্টার পরেও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এখনও তাদের নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। অনেকেই এখনও দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সাহায্যের জন্য। কিন্তু তাদের প্রয়োজনগুলো পূরণ হচ্ছে না। আমাদের নীতিমালা শক্তিশালী হলেও আমরা বাস্তবায়নে পিছিয়ে আছি। এখন সময় একসঙ্গে কাজ করার, সংগঠিত হওয়ার এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবসা গড়ে তুলতে প্রকৃত সহায়তা দেওয়ার সম্মিলিত পদক্ষেপ এখন জরুরি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা অর্থায়নে প্রবেশগম্যতার পথে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক পণ্য ও সেবা তৈরি করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।