ছাত্র আন্দোলনে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে নীতিমালার বিষয়ে রুল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে জুলাই-আগস্ট মাসে নিহত ও আহতদের কেন যথাযথ ক্ষতিপূরণের  দেওয়া হবে না ও ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে কেন একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রিটের বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব রুল জারি করেন।

আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার।  তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট নাঈম হোসেন অয়ন, খায়রুল বাশার,  বায়েজীদ হোসাইন ও ব্যারিস্টার মাহদী জামান (বনি)।

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার গত ৪ আগস্ট হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের তিনজন আইনজীবীর পক্ষে রিটটি দায়ের করা হয়। রিটকারীররা হলেন— ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার, ব্যারিস্টার মাহদী জামান (বনি) ও অ্যাডভোকেট খায়রুল বাশার।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজিপি ও র‌্যাবের মহাপরিচালক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়।

রিটে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও আহতদের এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের জন্য যুক্তরাজ্যের আদলে একটি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রিট বলা হয়েছে, জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী চলতি বছরের ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ও সংঘর্ষে ৬৫০ প্রাণ হারিয়েছেন ও হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।  তবে সরকারের তথ্য অনুযায়ী নিহত সহস্রাধিক। পত্রিকা তথ্য অনুযায়ী, আহতদের সংখ্যা ৩০ হাজারের অধিক।‌ এর মধ্যে চার শতাধিক মানুষ তাদের চোখ হারিয়েছেন। এর বেশিরভাগই বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী এবং সাধারণ মানুষ। বিবাদীদের  ব্যর্থতা ও অবহেলার কারণেই এই দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে।

রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সুপ্রিম কোর্টের তিনজন আইনজীবীর পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করা হয়েছিল। আজ  আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করি। রিটের গুরুত্ব বিবেচনা করে আদালত ছাত্র আন্দোলনে নিহতের পরিবার ও আহতদের  যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান ও ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে একটি নীতিমালা প্রণয়নে রুল জারি করেছেন।