সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের দুর্নীতি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রী মো. কামরুল ইসলাম এবং দুজন পৌর মেয়রের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুদক।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুদকের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।

দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে জানা যায়, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রী এবং ঢাকা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. কামরুল ইসলাম নিজের নামে এবং স্ত্রী-সন্তানদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন। আইন প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিম্ন আদালতের বেশিরভাগ কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে তিনি কোটি কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণ করেছেন। খাদ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় দুর্নীতির মাধমে ব্রাজিল থেকে নিম্নমানের গম ক্রয় করে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন কামরুল ইসলাম। এছাড়া নিজ নামে রাজধানীর ৪৮/১ নম্বর আজগর লেনে চার তলা বাড়ি নির্মাণ, মিরপুর আবাসিক এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট, নিজ নামে মিরপুর হাউজিং এস্টেটে ৪ কাঠা জমি, নিউ টাউনে ১০ কাঠা জমি, তার দুটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রজার গাড়ি রয়েছে (নম্বর-ঢাকা মেট্রো-ঘ, ১৫-৭৭০৭ এবং ঢাকা মেট্রো-ঘ, ১২-১৪৩৫)। তিনি ও তার অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর জ্ঞাত আয়-বর্হিভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন।

এছাড়া বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন বলেও দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় তার দুর্নীতির প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।

অপরদিকে, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি পৌরসভার মেয়র মেজবাহ উদ্দিন মেজু মেয়র পদে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়ম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রভাব খাটিয়ে স্বনামে ও তার পক্ষে অন্য ব্যক্তিদের নামে প্রচুর জ্ঞাত আয়-বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নগদ টাকা, অকৃষি জমি এবং স্ত্রীর নামে জমি, রামগতি পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প না করে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে বিল উত্তোলন ও বিভিন্ন বাজার ঘাট, নিজস্ব লোকের কাছে ইজারা দিয়ে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করেন। তার নিজ নামে, স্ত্রী ও অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের নামে-বেনামে সম্পদ অর্জন করেছেন মর্মে দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হয়েছে।

নেত্রকোনা জেলার মদন পৌরসভার মেয়র আব্দুল হান্নান তালুকদার বিভিন্নভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও স্বজন প্রীতির মাধ্যমে দলীয়/বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে অনিয়ম করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। মদনপুর পৌরসভার হাট-বাজার ও স্ট্যান্ডগুলো যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে ঘনিষ্টজনদের নামে ইজারা প্রদান করেছেন। তিনি ও তার ভাই মিলিতভাবে হাট-বাজার ও স্ট্যান্ডগুলোর ইজারার অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি মদনপুর পৌরসভার একাধিক জমি কয়েক কোটি টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন এবং একাধিক স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। তার গ্রামের বাড়িতে কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করেছেন আলীশান বাড়ি। দুই কোটি টাকা দিয়ে নিজ বাড়িতে প্রায় ৫ একর জায়গা ক্রয় করেছেন বলে দুদকের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় তার দুর্নীতির প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।