এখনও সাড়ে ৮ হাজার আনসার সদস্য সাময়িক স্থগিত অবস্থায় আছে

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আনসার সদস্যদের বিদ্রোহের ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আট হাজার আনসার সদস্যকে সাময়িকভাবে স্থগিত করে রাখা হয়েছে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদফতরে শারদীয় দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অঙ্গীভূত আনসার সদস্যদের আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আমাদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিটির প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। এই আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে আমরা প্রায় ১৩ হাজার ৮০ জন আনসার সদস্যকে সাময়িক স্থগিত করে রেখেছিলাম। তাদের স্থগিত করার পর আমরা তাদেরকে কোনও ডিউটি দেইনি। তবে আমরা এই ১৩ হাজার ৮০ জনের মধ্যে আরও যাচাই-বাছাই করেছি। যাদের আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বা তেমনভাবে সম্পৃক্ততা ছিল না এমন ৪ হাজার ৬৬৯ জনকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় আবারও কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করেছি।

তিনি বলেন, তবে এখনও ৮ হাজার ৬১১ জন আনসার সদস্যকে সামরিক স্থগিত করে রাখা হয়েছে। আর আন্দোলনের সময় যারা খুবই আগ্রাসী এবং হিংসাত্মক ভূমিকা পালন করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৪৪৭ জন আনসার সদস্য গ্রেফতার রয়েছেন।

উচ্ছৃঙ্খল আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা আন্দোলন করেছিলেন তারা এখন বুঝতে পেরেছেন এটি খারাপ কাজ ছিল। তাদের দাবিগুলো এড্রেস করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আনসারের রেস্ট প্রথা বাতিল করা হয়েছে।  ওদের দাবি ছিল বেতন, সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আনসার সদস্যদের রেশন বাড়ানো নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা গিয়েছে মন্ত্রণালয়। আমি নিশ্চিত এ বিষয়ে একটি পজিটিভ নির্দেশনা আসবে। যেহেতু এরা চুক্তিভিত্তিক কাজ করে তাই এদের কোনও পেনশন নেই তাদের একটা পেনশন সুবিধার দাবি ছিল। আমরা চেষ্টা করছি আনসার ব্যাংকের কোনও পেনশন স্কিমে তাদের যুক্ত করা যায় কিনা।

আনসার ডিজি বলেন, দেশের অন্য সব খাতের মতো আনসার বাহিনীতেও সংস্কার চলছে। আগে দেখা গিয়েছিল যে আনসার সদস্যদের কার্যক্রম শুধু সুনির্দিষ্ট একটি পরিধির মধ্যে ছিল। আমরা এখন নিয়োগ প্রক্রিয়া এমনভাবে করবো যাতে করে এখানে সকল জেলার প্রতিনিধিত্ব থাকে। আগে দেখা যেতো, আনসার সদস্যরা তাদের নিজস্ব চাওয়া অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পেতেন। কিন্তু এখন আর এমনটি হবে না। আমাদের নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, সবাইকে অন্যসব চাকরির মতো যে কোনও জায়গায় গিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আনসার বাহিনীতে এখন আর অনিয়ম কিংবা অনিয়মতান্ত্রিক কোনও কার্যক্রম থাকবে না।