আন্দোলন স্থগিত

আইজিপির আশ্বাসে কান্নায় ভেঙে পড়েন চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যরা

চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে রবিবার (১৮ আগস্ট) দুপুর থেকে বিক্ষোভ করছিলেন গত ১৫ বছরে নানা কারণে চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যরা। পরে সন্ধ্যা ৭টায় আন্দোলনরত সদস্যদের মধ্যে চার জনের সঙ্গে বৈঠক করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম।

আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যদের পক্ষ থেকে সমন্বয়কের দায়িত্ব নিয়ে বৈঠকে অংশ নেন চার সদস্য। বৈঠক শেষে পুলিশ সদর দফতরে চার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাইরে এসে মূল্যায়ন কমিটি গঠনের মাধ্যমে পুরো প্রক্রিয়া বিচার-বিশ্লেষণ ও চাকরি ফেরতের আশ্বাস দেন। এ সময় একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যরা। পরে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা।

পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ডেভেলপমেন্ট রেভিনিউ) ড. শোয়েব রিয়াজ আলম আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা জানেন, বর্তমান আইজিপি বিভিন্ন সময় বাহিনী কর্তৃক বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। তিনি আপনাদের ব্যাপারে আন্তরিক। আপনাদের চাকরি ফেরানোর বিষয়ে আন্তরিক। আপনাদের বিরুদ্ধে যদি বিন্দুমাত্র অন্যায়-অবিচার করা হয়, তাহলে চাকরি ফেরত পাবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আইজিপি মহোদয় একজন ডিআইজির নেতৃত্বে একটি কমিটি করে দিয়েছেন। আপনাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে সবকিছু বিচার-বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। কেস টু কেস দেখা হবে। সে জন্য একটু সময় দরকার। একজন একজন করে আসবেন, প্রত্যেকের বিষয় শোনা হবে। এমন কোনও প্রক্রিয়া অনুসরণ করা উচিত হবে না, চাকরি ফেরত পেলেন কিন্তু বেতন পেলেন না। আদালত থেকে যারা নির্দোষ হিসেবে খালাস পেয়েছেন, তারা অটোমেটিক চাকরি পাবেন। আর যাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান, সেগুলো জিডি আকারে আমলে নিয়ে ডিসমিস করা হবে।’

আইজিপির সঙ্গে বৈঠক থেকে বেরিয়ে চাকরিচ্যুত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘সুখবর আছে। আপনারা কেউ বিশৃঙ্খলা করবেন না। আইজিপির সঙ্গে ববৈঠকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলমান, তাদের জন্য প্রয়োজনে আইনজীবী নিয়োগ করা হবে। আর অধিকাংশই চাকরি ফেরত পাবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। মূল্যায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটিতে আমাদের প্রতিনিধিও থাকবেন।’

পরে আন্দোলনের সমন্বয়করা চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যদের নিয়ে প্রধান ফটক ছেড়ে সড়কের ফুটপাতে অবস্থান নেন। এতে রাত ৮টার পর পুলিশ সদর দফতরের সামনের সড়কে যান চলাচাল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে আজ দুপুর ১২টা থেকে ‘সামান্য কারণে বিভাগীয় মামলা’, ‘বেআইনি আদেশ না শোনা’, ‘ডোপ টেস্টের নামে ফাঁদ’, ‘ছুটি না দেওয়ায় তর্ক করা’সহ নানা অভিযোগে চাকরিচ্যুত হাজারো পুলিশ সদস্য পুলিশ সদর দফতরের সামনে অবস্থান নেন। এতে সদর দফতরে প্রধান ফটকসহ দুটি গেট বন্ধ করে রাখায় আইজিপিসহ সব কর্মকর্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।