আন্দোলনের প্রভাব শাহবাগের ফুলের দোকানে

কোটা সংস্কার ও ২০১৮ সালের মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে রবিবার (৭ জুলাই) থেকে শুরু হয় ‘বাংলা ব্লকেড’ নামে অবরোধ কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) কর্মসূচির চতুর্থ দিন শাহবাগ মোড়ে এই অবরোধ পালন করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

তবে রাজপথে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করলেও এর প্রভাব পড়েছে শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোয়। প্রায় প্রতিটি দোকান ক্রেতাশূন্য। বিক্রেতারা পার করছেন অলস সময়। এতে তাদের আয়রোজগারে পড়েছে প্রভাব।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ৩টার পর থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করার ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। যান চলাচলের সঙ্গে স্থবিরতা নেমে আসে ফুলের দোকানের বেচাকেনাতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সব সময় ব্যস্ত থাকা শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোর চিত্র আজ অনেকটাই ভিন্ন। সড়কে   গাড়ির চাপ কম। ক্রেতা-বিক্রেতাশূন্য এই এলাকার চিত্র দেখলে বোঝা যায় এখানকার ব্যবসায় কতটা ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে।

এখানকার ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান বলছেন, সাধারণত গাড়ি নিয়ে এ এলাকায় ক্রেতা বেশি আসে। কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে সেসব ক্রেতা আসতে পারছে না। তাই আমাদের ব্যবসায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির সীমা নেই। ক্যালকুলেট করেও বলা যাবে না।

বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে শাকিল জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ক্রেতা একেবারেই নেই। সারা দিন দোকান খোলা রাখলাম কিন্তু বেচাকেনা হলো না। সিজনের সময় প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়। যখন সিজন থাকে না, তখনও ভালোই বিক্রি হয়, কিন্তু আন্দোলনের সময় তা খুবই সীমিত হয়ে যায়।

১২ বছর ধরে শাহবাগে ব্যবসা করছেন আনিকা পুষ্পবিতানের বিক্রেতা আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, আন্দোলনের কারণে ক্রেতারা আতঙ্কে মার্কেটে আসছে না কখন কী হবে, এই ভয়ে। প্রতিদিন যেখানে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা বিক্রি হয়, সেখানে আন্দোলনের সময় বিক্রি পাঁচ হাজারের নিচে চলে আসে।

ফাতেমা পুষ্পালয়ের বিক্রেতা রবিউল ইসলাম বলেন, আমার বেচাকেনা সাধারণ সময়ের থেকে কম হয়েছে। যেহেতু রাস্তাঘাট বন্ধ, এটার প্রভাব তো বেচাকেনায় পড়বেই। প্রতিদিনই প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের পূর্বে চার দফা দাবি ছিল। তবে সেটি এক দফায় দাঁড়িয়েছে। তাদের এক দফা দাবি হলো, ‘সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য যে কোটা রয়েছে, সেটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে।’

ছবি: প্রতিবেদক