‌‘বাংলা ব্লকেড’ বলতে কী বোঝাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা

কোটা সংস্কার ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের সরকারি পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত ৫ জুন হাইকোর্ট ২০১৮ সালের পরিপত্রের আংশিক অবৈধ ঘোষণা করার পর আবার এই আন্দোলন শুরু হয়। এটি বাতিলের দাবিতে আজ রবিবার (৭ জুলাই) বিকালে সারা দেশে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শাহবাগ মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নির্ধারিত হওয়া এই কর্মসূচির নাম দিয়েছেন ‘বাংলা ব্লকেড’।

গতকাল শনিবার (৬ জুলাই) শাহবাগে 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। বাংলা ব্লকেড নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে তারা জানান, রবিবার (৭ জুলাই) সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক আটকে দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া।

'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির আওতায় ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক অবরোধ করবেন তারা। অবরোধ শুরু হবে বিকাল ৩টায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গিয়ে সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানিয়েছেন।

ঢাকায় 'বাংলা ব্লকেড'র আওতায় থাকবে শাহবাগ মোড়, সায়েন্সল্যাব, চানখাঁরপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিল, মহাখালী, বাংলামটরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এরপর যদি দেখা যায় কোনও জায়গায় বাইপাস দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে, প্রয়োজনে সেগুলোও অবরোধ করবেন বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গাড়ি আটকানোর জন্য সম্ভাব্য সব রুট অবরোধ করবেন তারা।

অবরোধের সমাপনী বক্তব্যে প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনারা আমাদের বাধা দেবেন না। আমাদের বাধা দিলে তা ভালো হবে না। আমাদের চাকরি না থাকলে আপনাদের চাকরিও থাকবে না।’

কোটাবিরোধী আন্দোলন (ছবি: নাসিরুল ইসলাম)

অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলন শুধু আমাদের আন্দোলন না। এই আন্দোলন আপনাদেরও আন্দোলন। আপনাদের সন্তান চাকরি না পেলে, আপনাদেরও ভোগান্তি হবে। তাই আমাদের আন্দোলনে আপনারা সহযোগিতা করুন।’

আন্দোলনের সমাপ্তি টেনে নাহিদ হাসান বলেন, ‘আগামীকাল (রবিবার) বিকাল ৩টা থেকে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। আগামীকাল সারা দেশে প্রতিটি মোড়, প্রতিটি সিগন্যাল ব্লক করা হবে।’

সারা দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি এই ব্লকেড কর্মসূচি পালন করার আহ্বান জানান তিনি।

'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি বলতে কী বোঝাচ্ছেন, জানতে চাইলে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শারজিস আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাংলা ব্লকেড মানে হলো, সারা দেশে আমরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করবো, যাতে কোনও গাড়ি চলতে না পারে। শহরের যান চলাচল (সারা দেশ ব্লক করার জন্য আমরা সম্ভাব্য সব রুট অবরোধ করবো। যদি জানতে পারি কোনও বিকল্প রুটে বাইপাস দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে, সেটিও অবরোধ করবো।’

এই অবরোধ কতক্ষণ পর্যন্ত চলবে, জানতে চাইলে শারজিস বলেন, ‘এটি আসলে এখন সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আমরা যত বেশি সময় থাকা যায়, সেই চেষ্টা করবো। সম্ভব হলে আমরা রাত পর্যন্ত অবস্থান করবো।’

আরও পড়ুন

কোটা নিয়ে বিরোধী দলগুলোর সমর্থনের ‘রাজনীতি’

পঞ্চম দিনে কোটাবিরোধী আন্দোলন

মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের রায় আপাতত বহাল

কোটা পুনর্বহাল: বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

কোটা চায়, নাকি চায় না

কোটা ও পেনশন স্কিম বাতিলের আন্দোলনে বিএনপির সমর্থন

‘কোটা-শিক্ষকদের আন্দোলনে ভর করবে বিএনপি’

কোটা বাতিলের দাবিতে আবারও শাহবাগ অবরোধ

‘সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহাল সংবিধানবিরোধী’

কোটা বাতিলের দাবিতে রাজপথে শিক্ষার্থীরা

কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

কোটা বাতিলের দাবিতে মাঠে শিক্ষার্থীরা, বহাল চায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ: হাইকোর্ট

‘কোটা বাতিলের জন্য প্রয়োজনে আবার রক্ত দেবো’