আনসার আল ইসলামের তিন সদস্য গ্রেফতার

নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাতে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-১৫ ও র‍্যাব-৭ এর যৌথ আভিযানে কক্সবাজারের চৌফলদণ্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

গ্রেফতাররা হলো— মো. জাকারিয়া মণ্ডল (১৯), মো. নিয়ামত উল্লাহ (২১) ও মো. ওজায়ের (১৯)। এসময় তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী দশটি বই, ২৯টি লিফলেট, একটি ডায়েরি ও বিস্ফোরক তৈরির ম্যানুয়াল উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব সূত্র জানায়, গ্রেফতাররা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর সক্রিয় সদস্য। তারা আফগানিস্তানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এ যোগ দেয়। আনসার আল ইসলামের নামে কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যায় পড়ে একই মতাদর্শের ‘আস-শাহাদাত’ নামে নতুন জঙ্গি গ্রুপ তৈরি করে তারা সদস্য সংগ্রহসহ দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা আনুমানিক ৮৫-১০০ জন।

গ্রেফতারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা আলামতর‍্যাব জানায়, গ্রেফতাররদের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা। সংগঠনের সদস্যদের ও নতুন সদস্য সংগ্রহ করে তাদেরকে বিভিন্ন অপব্যাখ্যা ও মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে দেশের বিচার ও শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করে উগ্রবাদী করে তুলতো। সংগঠনের সদস্যদেরকে তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী পুস্তিকা, মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, টেলিগ্রাম ও বিপ গ্রুপের মাধ্যমে সরবরাহ করতো। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে তারা সদস্যদের নিয়ে গোপন সভা পরিচালনা করতো। গ্রেফতাররা গোপনীয় অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করতো এবং সংগঠনের সকল প্রকার নির্দেশনা এই অ্যাপসের মাধ্যমে দিতো।

র‍্যাব জানায়, গ্রেফতার জাকারিয়া ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার একটি মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত। পরে সে আনসার আল ইসলাম মতাদর্শী ‘আস-শাহাদাত’ গ্রুপের ময়মনসিংহ ও জামালপুর অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়। সে এই সংগঠনের সদস্য আগে গ্রেফতার হওয়া জিহাদের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় অনলাইনে মোবাইল হ্যাকিংয়ে বিষয়ে মৌলিক প্রশিক্ষণ নেয় এবং মোবাইল হ্যাকিংয়ে পারদর্শিতা অর্জন করে।

গ্রেফতার নিয়ামত এবং গ্রেফতার ওজায়ের চট্টগ্রামের পটিয়ার একটি মাদ্রাসার কিতাব শাখায় অধ্যয়নরত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি গ্রুপে একজন জঙ্গি নেতার সঙ্গে গ্রেফতারদের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তারা উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগ দেয় এবং মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন এলাকায় দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। গ্রেফতার নিয়ামত এবং গ্রেফতার ওজায়ের আগে গ্রেফতার কথিত আমির আসাদুজ্জামান আসিফের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিল। এছাড়াও গ্রেফতার নিয়ামত এবং গ্রেফতার ওজায়ের আগে গ্রেফতার হওয়া কথিত আমির আসাদুজ্জামানের সঙ্গে একই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতো বলে জানা যায়।

র‍্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ অ্যান্ড মিডিয়া) আবু সালাম চৌধুরী জানান, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।