রাজনৈতিক দলগুলোর ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের নির্দেশনা অনুসারে রাজনৈতিক দলগুলোকে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

রবিবার (৯ জুন) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশন ও অপরাজিতাদের এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি উঠে আসে। বিকালে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জাতীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্ক।

সংসদ সদস্য আরমা দত্তের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নিজেদের উন্নয়নের জন্য আরও বেশি কাজ করতে হবে। নারীরা ঘরেও কাজ করতে পারে, বাইরেও কাজ করতে পারে।

সভার প্রধান অতিথি নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, রাজনৈতিক দলে ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হলে। অপরাজিতাদের অনেক কাজ করে যেতে হবে। আমি আপনাদের দাবিগুলো কমিশনের মিটিংয়ে উপস্থাপন করবো।

জাতীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সদস্য ও বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাছিমুল আরা হক মিনু বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল এখনও ৩৩ শতাংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পারেনি, নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করছি— আপনারা সেসব রাজনৈতিক দলকে আরও বেশি বেশি মনিটরিং করুন।

রংপরের অপরাজিতা মঞ্জুশ্রী সাহা বলেন, আমরা নিজেরা যদি অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে না পারি তাহলে রাজনৈতিকভাবে খুব বেশি দূর এগোতে পারবো না।

অপরাজিতা অ্যাডভোকেট সোনিয়া বলেন, আমাদের নারীদের সার্বিক যোগ্যতা থাকার পরও রাজনীতিতে ভালো অবস্থান করতে পারছেন না।

বরিশালের অপরাজিতা অধ্যাপিকা শাহেদা বেগম বলেন, দেশে নারী- পুরুষ সমান, এখানে আবার ৩৩% কী? রাজনৈতিক দলে সমান সমান পদ-পদবী হলে দোষের কী?

চট্টগ্রামের অপরাজিতা অ্যাডভোকেট দিল আফরোজ বলেন, রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করলে নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে।

দিনাজপুরের অপরাজিতা লায়লা বানু বলেন, নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা এমনকি যাচাই-বাচাইসহ গেজেটে নারীদের নাম সবার শেষে থাকে। কমিশনারকে এই বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। 

ডেমক্রেসি ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক ওয়াজেদ ফিরোজ বলেন, এই প্রকল্প অপরাজিতা ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করেছে। যত বেশি নারীদের সম্পৃক্ত করা যাবে, নারীদের রাজনৈতিক দলে পদ-পদবী পাওয়া তত বেশি সহজ হবে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হেলভেটাস-সুইস ইন্টার কো-অপারেশনের প্রতিনিধি ও অপরাজিতা প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ফৌওজিয়া খোন্দকার।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ ও দাবি উপস্থপান করেন খুলনার অপরাজিতা আকলিমা সুলাতানা তুলি। অন্যান্যদের বিআইজিডি’র সিনিয়র ফেলো অব প্রাকটিস মাহিন সুলতান, সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি, হেলভেটাস-সুইস ইন্টারকোঅপারেশন ও প্রকল্পের পরিচালক প্রশান্ত ত্রিপুরাসহ, ছয়টি বিভাগ থেকে আসা আরও ৪০ জন ‘অপরাজিতা’, সাংবাদিক, বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সুইজারল্যান্ডের (এসডিসি-এর) সহযোগিতায়, হেলভেটাস-সুইস ইন্টারকোঅপারেশনের ব্যবস্থাপনায়, রূপান্তর, প্রিপ ট্রাস্ট, খান ফাউন্ডেশন ও ডেমক্রেসিওয়াচ- অপরাজিতা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে আসছে। সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি জেলাধীন ৬২টি উপজেলার ৫৪০টি ইউনিয়নে অপরাজিতা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।