‘বাজেটে প্রস্তাবিত তামাক কর জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা সহায়ক না’

নতুন অর্থ বছরের (২০২৪-২৫) প্রস্তাবিত বাজেটে তামাক কর তরুণদের ধূমপান ও তামাকজাতদ্রব্যের আকাঙ্ক্ষা কমাতে সহায়ক হবে না বলে জানিয়েছে আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং। শনিবার (৮ জুন) সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক কৌশলের মধ্যে বিশ্ব স্বীকৃত অন্যতম পদ্ধতি হলো তামাকপণ্যের দাম তরুণদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের বাইরে নিয়ে যাওয়া। সে লক্ষ্যে তরুণ সমাজকে তামাকের নেশা থেকে রক্ষার জন্য প্রস্তাবিত বাজেট সংশোধন করে তামাক কর যুগোপযোগী করতে হবে। বাংলাদেশে বর্তমান মোট জনগোষ্ঠীর ৪৮ শতাংশই তরুণ-তরুণী। তামাক কোম্পানির মূল টার্গেট এই তরুণ জনগোষ্ঠি। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উচিত, তামাক কোম্পানির ছোবল থেকে তরুণদের সুরক্ষা দেওয়া।

বিজ্ঞপ্তিতে আহছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং সমন্বয়কারী মারজানা মুনতাহা জানান, তামাকে আসক্ত প্রজন্ম সমাজ ও অর্থনীতির জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। তাই জনস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে তামাকজতদ্রব্যের কর বাড়াতে হবে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত যুবকদের অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতে পারে বিড়িসহ সব তামাক কর বৃদ্ধি। এই কর বৃদ্ধি জনস্বাস্থ্যের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ছাড়াও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করবে।

সংগঠনটির প্রোগ্রাম অফিসার খাদিজাতুল কুবরা সিমা বলেন, ‘অল্প বয়সে ধূমপান ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া ধূমপানে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি অন্যান্য নেশার দিকে ঝুঁকে যাওয়াও সম্ভাবনাও প্রবল থাকে।’

তিনি জানান, সিগারেটের নিম্নস্তরের ১০ শলাকার মূল্যস্তর ৫০ টাকা বা তার বেশি এবং সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ ধার্যের প্রস্তাব করেছে। গত অর্থবছরে ১০ শলাকার মূল্যস্তর ৪৫ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৫৮ শতাংশ ছিল। মধ্যম স্তরের ১০ শলাকার মূল্যস্তর গত বছরের চেয়ে তিন টাকা বাড়িয়ে ৭০ টাকা বা তার বেশি, উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার মূল্যস্তর ১১৩ টাকা থেকে ১২০ টাকা বা তার বেশি, অতি উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার মূল্যস্তর ১৫০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা বা তার বেশি নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই তিন স্তরের সম্পূরক শুল্ক ৬৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে এবার (২০২৪-২৫) ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

খাদ্যসহ অনেক নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ২০২১ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৪০ শতাংশ থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকজাতদ্রব্যের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক ১১ শতাংশ পর্যন্ত। ফলে নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য আরও সস্তা হয়ে পড়বে।