‘বাজেটে পানি ও স্যানিটেশন খাতে বরাদ্দ বাড়লেও বৈষম্য রয়ে গেছে’

‘আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া উচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এ খাতে বরাদ্দ বাড়লেও নানা ধরনের বৈষম্য রয়ে গেছে। সামগ্রিকভাবে এ খাতে তিন ধরনের বৈষম্য দেখা যায়, যা সমাধান করা উচিত।’

‘গ্রাম-শহরের বৈষম্য, আন্তনগর বৈষম্য; বিশেষ করে হাওর অঞ্চলে পৌঁছানো কঠিন, এমন কিছু এলাকায় কম মনোযোগ দেওয়া হয়। বরাদ্দের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সব ধরনের বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ওয়াশ খাতের বরাদ্দ এডিপি বৃদ্ধির আকারের সমানুপাতিক বা উচ্চতর হতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা।

সংবাদ সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে পিপিআরসি, ওয়াটারএইড, ফানসা, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অলসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা।

অর্থনীতিবিদ ও পিপিআরসি নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ৬ নম্বর লক্ষ্য হলো, সবার জন্য নিরাপদ পানীয় জল ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করা। এই লক্ষ্যমাত্রা সঠিক সময়ে অর্জন নিশ্চিত করতে হলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বৃদ্ধির হার এবং উন্নয়ন বাজেটের সঙ্গে ওয়াশ খাতের বরাদ্দকেও তাল মিলিয়ে চলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে এডিপি বরাদ্দের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসন এবং সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। চর, হাওর, পাহাড়ি অঞ্চলসহ জলবায়ুগত ঝুঁকির আওতাধীন সুবিধাবঞ্চিত এলাকা ও নগরগুলোর মধ্যকার বরাদ্দ বৈষম্য নিরসন করা প্রয়োজন।

ওয়াশ খাতের জন্য এডিপির বরাদ্দ ওঠানামা এবং কম আনুপাতিক বৃদ্ধির প্রবণতা দেখায় উল্লেখ করে জিল্লুর রহমান বলেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এমডিজি) ওয়াশ খাতের তুলনায় এসডিজি যুগের ওয়াশ খাতের লক্ষ্যমাত্রা আরও জটিল ও চ্যালেঞ্জিং। এখন নিরাপদ খাওয়ার পানি ও নিরাপদ স্যানিটেশনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপির দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় ওয়াশ খাতের বেশ প্রশংসনীয় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়; যদিও বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন দেখায় যে প্রবৃদ্ধি সামগ্রিক এডিপির আকার বৃদ্ধির হারের সমানুপাতিক ছিল না। দেখা যায় যে এডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ওয়াশ খাতের বরাদ্দের জন্য ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ খুবই কম। ওয়াশ খাতের বরাদ্দের ক্ষেত্রে অনুপাতের তুলনায় এই ধরনের কম বৃদ্ধি এসজিডি ৬-এ সরকারের প্রতিশ্রুতি সময়মতো অনুধাবনের বেলায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

এ সময় আসন্ন (২০২৪-২৫) বাজেটে পূর্ববর্তী অর্থবছরগুলোর মতো এই বছরেও কিশোরী ও প্রজননক্ষম নারীদের মাসিককালীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামালসহ স্থানীয় পর্যায়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রির ওপর ধার্য করা সব ধরনের শুল্ক ও কর শতভাগ মওকুফ করার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।