ছাত্রদের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার

১০ বছরের কম বয়সী ৩০ জন স্কুলছাত্রকে বিকৃত যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগে আবদুল ওয়াকেল নামে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শনিবার (১৮ মে) রাজশাহী শহরের শ্যামপুর ডাঁশমারী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, কম্পিউটারের দুটি হার্ডডিস্ক ও দুটি পেনড্রাইভ জব্দ করা হয়।

রবিবার (১৯ মে) বিকালে রাজধানীতে সিআইডির মিডিয়া কর্মকর্তা পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, যৌন নিপীড়নের দৃশ্যগুলোর ভিডিও ধারণ করে ওই শিক্ষক তার নিজের মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার এবং এক্সটার্নাল হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করে রাখে। সার্চ ইঞ্জিন এসব তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেন (এসসিএমইসি) নামের এক প্রতিষ্ঠানের কাছে।

এসসিএমইসি ওইসব ছবি ও ভিডিও সিআইডির কাছে পাঠায়। এরপর সিআইডি’র নিজস্ব ক্রিমিনাল ইন্টেলিজেন্স টিম তদন্ত শুরু করে। স্থানীয় ভুক্তভোগী অনেক ছাত্র ও তাদের অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তকারী টিমের কাছে আবদুল ওয়াকেলের ভয়ংকর তথ্য সরবরাহ করে।

সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আবদুল ওয়াকেল রাজশাহীর কাটাখালীর আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের একজন শিক্ষক। ছাত্রাবস্থায় সে তার এলাকায় টিচ-আইএন নামে একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতো। তখন থেকেই সে কোচিংয়ের ছাত্রদের টার্গেট করে চকোলেট দিয়ে এবং মোবাইলে গেমস খেলার প্রলোভন দেখিয়ে সখ্য গড়ে তুলতো।

পরবর্তী সময়ে তাদের ফুসলিয়ে তার কোচিং সেন্টারে অথবা নিজ বাড়িতে এবং কখনও কখনও আশপাশের আম বা লিচু বাগানে নিয়ে যেতো। সেখানে ছাত্রদের হাতে চকোলেট দিতো, আবার হাতে মোবাইল ফোন দিয়ে পাবজি গেম খেলতে বলতো। বাচ্চারা যখন জনপ্রিয় পাবজি গেম খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো, এই সুযোগে সে তাদের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করতো। আগে থেকে সেট করা মোবাইল ক্যামেরায় যৌনাচারের ভিডিও ধারণ করে তা সংরক্ষণ করতো। যৌন নিপীড়নের শিকার সব শিশুই তার ছাত্র ছিল।

সিআইডি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল ওয়াকেল স্বীকার করেছে অনার্সে পড়ার সময় থেকে ছেলে বাচ্চাদের সঙ্গে সে বিকৃত যৌনাচার করে আসছে। এই নেশার কারণে বালকদের জন্য কোচিং সেন্টার চালু করে। কোচিং সেন্টারে পড়া বাচ্চাদের নানাভাবে প্রলুব্ধ করে গোপনীয় স্থানে নিয়ে যেতো এবং তাদের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হতো।

আবদুল ওয়াকেল গোয়েন্দাদের কাছে স্বীকার করেছে, এ পর্যন্ত ৩০ জন স্কুলছাত্রকে সে ধর্ষণ করেছে।

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানায় সিআইডি।