এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে বাংলা ট্রিবিউনের এক দশক পূর্তি উদযাপন

১০ বছর পেরিয়ে ১১ বছরে পা রাখলো অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন। ২০১৪ সালের ১৩ মে যাত্রা শুরু হয় বাংলা ট্রিবিউনের। এক দশকের পথচলায় বাংলা ট্রিবিউন যেমন দায়বদ্ধতা ও দায়িত্বশীলতার প্রমাণ রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে, তেমনি ‘সঠিক সময়ে সঠিক খবর’ দেওয়ার মূলমন্ত্রে পাঠকদের আস্থার জায়গাও নিতে পেরেছে।

সোমবার (১৩ মে) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কেটে এবং শুভানুধ্যায়ীদের পদচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করা হয় দিনটি। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদযাপনে শামিল হন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদ। সহকর্মীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান তিনি, সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন বাংলা ট্রিবিউন নিয়ে নিজের ভালো লাগার অনুভূতি।

কাজী ইনাম আহমেদ বলেন, বাংলা ট্রিবিউনের ১০ বছর পূর্তিতে আমি পুরো পরিবারকে শুভেচ্ছা জানাই। ঢাকা ট্রিবিউনের পর পরই বাংলা ট্রিবিউনের যাত্রা শুরু হয়েছিল। তখন পত্রিকার প্রকাশক ড. কাজী আনিস আহমেদের ভাবনা ছিল আমরা কীভাবে এমন একটা অনলাইন পত্রিকা করতে পারি, যেটির ওজন হবে দৈনিক পত্রিকার মতো। আমার মনে হয় বাংলা ট্রিবিউন সেটি অবশ্যই করতে পেরেছে। বাংলা ট্রিবিউন ও এর খবর সম্পর্কে সবার কাছ থেকে ইতিবাচক কথাই শুনেছি।

সহকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন বাংলা ট্রিবিউনের পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদ

তিনি আরও বলেন, অনলাইন পত্রিকার ধারণার মধ্যে থাকে ক্লিক আর ভিউ পাওয়া। সেই চিন্তা করলে সংবাদ হয় এক রকম। আর সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতার কথা বিবেচনা করলে সেটা হয় ভিন্নরকম। বাংলা ট্রিবিউন সংবাদের মান যেভাবে ধরে রেখেছে– এটি সত্যি অনুকরণীয়। 

বাংলা ট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল তার সহকর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, সবার প্রচেষ্টায় এত বছর পেরিয়ে বাংলা ট্রিবিউন আজকের এই শক্ত অবস্থানে এসেছে। তরুণদের একটি দল নিয়ে আমরা যাত্রা করেছিলাম, সেটা এখন অনেক পরিণত। বাংলা ট্রিবিউন সামনে আরও এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা রইলো।

‘সঠিক সময়ে সঠিক খবর’ স্লোগানে উজ্জীবিত বাংলা ট্রিবিউন দ্রুততার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি সঠিক তথ্য পরিবেশনের চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে কাজ করে চলেছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলা ট্রিবিউনের সবচেয়ে বড় শক্তি তার পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীরা।

ডিজিটাল গণমাধ্যমের উৎকর্ষতার এই সময়ে বাংলা ট্রিবিউন জন্মলগ্ন থেকেই প্রচলিত অনলাইন পোর্টালের বাইরে নতুন কিছু করতে চেয়েছে। তার দৃষ্টান্তও দেখিয়েছে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতি বছরই বিশেষ ছাপা সংখ্যা বের করে আসছে। বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এ বছরও বাংলা ট্রিবিউনের ছাপা সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। দশম বর্ষপূর্তির ছাপা সংখ্যায় সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যকে থিম হিসেবে নেওয়া হয়েছে। বর্ষপূর্তি ছাড়াও বিশেষ বিশেষ দিবস ও ইভেন্টকে সামনে রেখে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে আসছে বাংলা ট্রিবিউন।

১০ পেরিয়ে ১১ বছরে পা রাখলো বাংলা ট্রিবিউন

দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত পৃথক বাণী দিয়েছেন। পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের প্রকাশক কাজী আনিস আহমেদ এবং সম্পাদক জুলফিকার রাসেল।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, ‘বাংলা ট্রিবিউন বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় অনলাইন পত্রিকা। এক দশক ধরে জাতীয় ও তৃণমূল পর্যায়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সমস্যা, সুযোগ-সম্ভাবনা ও জনমতকে সরকারের সামনে তুলে ধরতে পত্রিকাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করার পাশাপাশি বাংলা ট্রিবিউন দেশ ও জনগণের কল্যাণে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে, এটাই সবার প্রত্যাশা।’

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তার বাণীতে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দায়িত্বশীল ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে বাংলা ট্রিবিউনকে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে জরুরি সংবাদটি সাধারণ মানুষের কাছে সঠিক ও দ্রুততার সঙ্গে পৌঁছে দিতে বাংলা ট্রিবিউনের প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। প্রতিষ্ঠানটি সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে আশা করি।’

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত তার বাণীতে বলেন, ‘সারা বিশ্বে অপতথ্য ও ভ্রান্ত তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব সহজেই অপতথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশও এর থেকে মুক্ত নয়। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি দেশের অন্যতম অনলাইন গণমাধ্যম হিসেবে বাংলা ট্রিবিউন অপতথ্য ও ভুল তথ্যের বিপরীতে সত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তাহলে বস্তুনিষ্ঠতার বিচারে আরও গ্রহণযোগ্য ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে এই অনলাইন গণমাধ্যম।’

গত তিন দশকে প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের রূপ বদলেছে উল্লেখ করে বাংলা ট্রিবিউন প্রকাশক কাজী আনিস আহমেদ বলেন, ‘এই পরিবর্তন আগামী এক দশকে সাংবাদিকতাকে আরও ত্বরান্বিত করবে। মুখোমুখি হবে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জেরও। সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যারা নিজেকে যতটা প্রস্তুত করতে পারবে, সময়টা তাদের হবে। বরাবরের মতো বাংলা ট্রিবিউন সেই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত ও পারঙ্গম।’ 

ছবি: সাজ্জাদ হোসেন