চাকরি স্থায়ীর দাবিতে বিটিসিএল কর্মচারীদের ‘লাগাতার অবস্থান’

চাকরি স্থায়ীকরণ এবং কোম্পানি কাঠামো অনুযায়ী, বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দাবিতে রাজধানীর পরিবাগে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) কার্যালয়ে ‘লাগাতার অবস্থান’ কর্মসূচি পালন করছে বিটিসিএলের দেড় হাজার কর্মচারী। গত পাঁচ বছর ধরে তারা এই দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। সর্বশেষ মার্চ মাসের শুরুতে এক মানববন্ধনের মাধ্যমে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বিটিসিএল কর্তৃপক্ষকে দেড় মাসের আল্টিমেটার দেন শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সদস্যরা।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি নিয়ে বিটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান পালন করছে আন্দোলনকারীরা। সোমবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, বিটিসিএল’র প্রায় হাজার খানেক শ্রমিক তাদের ‘লাগাতার অবস্থান’ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। দেশের প্রতিটি জেলা থেকে আগত প্রায় দেড় হাজার কর্মচারী এই কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটির মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। কর্মসূচি ঘিরে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলায় ঘটনাস্থলের আশপাশে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আন্দোলনকারীদের দাবি, বিটিসিএলের ২৪, ৫৭ ও ৭৩ বোর্ড সভায় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে কোম্পানির অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী— নিয়োগ এবং বেতন প্রদানের সিদ্ধান্ত হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও এসব দাবি আলোর মুখ দেখেনি। তাই সুনির্দিষ্ট ঘোষণা ছাড়া তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন না।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিটিসিএলের গুলশান অঞ্চলে কর্মরত এসএম মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিটিসিএলে কর্মরত অধিকাংশই ২০ থেকে ৩০ বছর ধরে কাজ করছেন। কিন্তু কাউকেই স্থায়ী করা হয়নি। শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন মাস্টাররোল ও ওয়ার্কচার্জ এবং সর্বশেষ আত্মীয়করণ করা হয়েছে। অথচ আমাদের কনফার্মেশন লেটার দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি কেউ মারা গেলে তাদের দাফন-কাফনেরও কোনও ব্যবস্থা করে না বিটিসিএল।

বিটিসিএল শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক হাবিবুর রহমান মিঠু বলেন, আমরা ২০১৩ সালে ১৯ আগস্ট ১৮৫৭ জন বিটিসিএল’র মাস্টারোলে অন্তর্ভুক্ত হই। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালে আমাদের ১২তম গ্রেডে নিয়োগ (বিলোপযোগ্য) দেওয়া হয়। সেখানে বিধিমালা অনুযায়ী এক বছর পর আমাদের স্থায়ীকরণের কথা থাকলেও পাঁচ বছরেও স্থায়ী নিয়াগপত্র দেওয়া হয়নি।’

বিটিসিএল শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ইকবাল হোসেন তুহিন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আাসছি। ১৮৫৭ জন চাকরি শুরু করলেও বর্তমানে আমাদের ১৫৩৪ জন শ্রমিক ভাই রয়েছেন। আমাদের সঙ্গে বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ প্রতারণা করছে। আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা ঠাট্টা করছে। এখন প্রতিটি জেলার কর্মরত আমরা সবাই একত্রে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। দাবি মানা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।