মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের যে জায়গাটিতে আগুন লেগেছে, সেই অংশেই ছোট-বড়-মাঝারি ধরনের প্রায় সাড়ে ৩০০ মতো দোকান ছিল। আগুনের তীব্রতার কারণে তার বেশিরভাগই এখন আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই। নিজেদের উপার্জনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের চোখের সামনে পুড়ে যেতে দেখে শোকে স্তব্ধ ব্যবসায়ীরা। তারপরও যদি কোনও কিছু বের করা যায়; সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আগুন নিয়ন্ত্রণে ধীরগতির কারণে অনেক দোকান পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস সঠিকভাবে কাজ করতে না পারার কারণে আগুন পুরো মার্কেটে ছড়িয়ে গেছে। এতে করে প্রায় কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। ব্যবসায়ীদের ধারণা, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি টিম আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আগুন কমে এসেছে। তবে আগুন নেভানোর কাজ এখনও চলছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ব্যাংক কিংবা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন বলে জানান শাহজালাল নামের এক ব্যবসায়ী। হতাশা প্রকাশ করে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা দোকান থেকে কোনও কিছুই বের করতে পারিনি। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষতি তো আমার হয়েছে। এই ব্যথা কখনও বলে বোঝাতে পারবো না।’
শোকস্তব্ধ আরেক ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কিছু পণ্য বের করতে পেরেছি। তবে বেশিরভাগই আগুনে পুড়ে গেছে। আগুন লাগার খবর কিছুটা দেরিতে পাওয়ায় আসতে আসতেও দেরি হয়েছে। এর আগেই বেশিরভাগ পুড়ে গেছে।’
এদিকে উৎসুক জনতারা ঘটনাস্থলে ভিড় জমিয়েছে। এরই ফাঁকে কেউ কেউ দোকানগুলো থেকে মালামাল সরানোর চেষ্টাও চালাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের পণ্য চুরি ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা যেন পণ্য নিয়ে বের হতে পারেন, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জায়গা করে দিচ্ছেন।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করছে পুলিশ। এছাড়া আশপাশের নিরাপত্তার বিষয়গুলো সম্পর্কেও অবগত হচ্ছে পুলিশ।
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অগ্নি নির্বাপনী সাহায্যকারী দল। উদ্ধার-সহায়তায় বিজিবিও মোতায়েন করা হয়েছে।