‘ইউএন ওমেন’-এর বাংলাদেশ আবাসিক প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং বলেছেন, ‘কোনও দেশ এখনও পর্যন্ত নারী পুরুষের সমতা আনতে পারেনি। পরিবর্তন কোথাও না কোথাও থেকে শুরু করতে হবে এবং এই বিষয়ে কথা বলার জন্য জাতিসংঘের কান্ট্রি টিম প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বুধবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে জাতিসংঘের সঙ্গে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী নারীদের উৎসাহিত করতে ও চাকরির আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাতে জাতিসংঘ বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ইউএন হিউমান রিসোর্স ওপেন ডে ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় জানিয়েছে, চাকরির আবেদন এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে আগ্রহী প্রায় ৮০ জন নারী এতে অংশ নেয়। জাতিসংঘের হিউম্যান রিসোর্সেস ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং জেন্ডার ইকুয়ালিটি গ্রুপ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠনের আয়োজন করে। ২০২৮ সালের মধ্যে জেন্ডার সমতা আনার উদ্দেশ্যে, জাতিসংঘ তাদের নারীকর্মীর সামগ্রিক সংখ্যা বাড়াতে কাজ করছে। বর্তমানে বাংলাদেশে জাতিসংঘে বিদ্যমান ২৪টি সংস্থার মধ্যকার ১৬টি আবাসিক সংস্থায় প্রায় ৩ হাজার ৫২৩ জন কর্মী রয়েছে।
নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতে, জাতিসংঘ বাংলাদেশ একটি ‘ন্যাশনাল জেন্ডার প্যারিটি স্ট্র্যাটেজি’ বা জাতীয় জেন্ডার সমতা কৌশল তৈরি করেছে। ইউএন হিউমান রিসোর্স ওপেন ডে ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি তারই একটি অংশ। জাতিসংঘের কর্মীবাহিনীতে নারী পুরুষের হার সমান করার জন্য এই স্ট্র্যাটেজিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হয়েছে, যেমন- অনুকূল পরিবেশ তৈরি; নেতৃত্ব জোরদার করা এবং কর্মীদের নিয়োগ, ধরে রাখা এবং অগ্রগতিতে জেন্ডার পক্ষপাত সমাধান করা।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএফপিএ-এর আবাসিক প্রতিনিধি ক্রিস্টিন ব্লোখুস অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লিঙ্গ সমতার লক্ষ্য শুধু একটি সংখ্যাগত লক্ষ্য নয়; এটি সব জেন্ডারের মানুষের সমান সুযোগ পাওয়ার বাধাগুলো দূর করার জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতির একটি প্রতিফলন।
ইউএন ওপিএস কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালীধরন বলেন, ‘ভালো কাজের পরিবেশ কেবলমাত্র আকাঙ্ক্ষা নয়, প্রয়োজনীয়তা। এটি সেই ভিত্তি, যাকে কেন্দ্র করে আমরা শক্তিশালী দল তৈরির মাধ্যমে উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করতে পারি এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি।’
অনুষ্ঠানে আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থার কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পোটিআইনেন বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাসের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমতার উপর জোর দিতে হবে। নারী পুরুষের সমতা থাকলে তার সুবিধাগুলি কর্মক্ষেত্রের বাইরেও ভালভাবে প্রয়োগ করা যায়।’
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, ‘নারী পুরুষের সমতা বাস্তবায়নে বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে। যা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচিত।’