স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান জানিয়েছেন, লকডাউন গাইড লাইন অনুযায়ী, যে এলাকাকে লকডাউন ঘোষণা করা হবে ওই এলাকা থেকে কেউ বের হতে পারবে না এবং কেউ প্রবেশও করতে পারবে না। সাধারণ যান চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সবকিছু হবে নিয়ন্ত্রিত। আর অসহায় এবং দরিদ্রদের জন্য সিটি করপোরেশন থেকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে। মানুষ চাইলে অনলাইনে কেনাকাটা করতে পারবে।
লকডাউনে চাকরি হারানোর আশঙ্কায় থাকা পূর্ব রাজাবাজার মসজিদ গলির বাসিন্দা আকবর আলী বলেন, ‘আমি গুলিস্তানের একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করি। আমার বাসা এখানে। লকডাউনের কারণে আমি অফিসে যেতে পারবো না। এভাবে অফিস মিস হলে আমাকে কি কোম্পানি রাখবে? বেতন দেবে? আমি লকডাউনে, কিন্তু আমার কর্মস্থল খোলা এটা কীভাবে হয়? এটার তো সমাধান হওয়া উচিত। এ নিয়ে এখন চিন্তায় আছি। কী করবো জানি না। বুঝতে পারছি না।’
সানজিদা আক্তার নামে এক সরকারি চাকরিজীবী বলেন, ‘আমি সরকারি অফিসে চাকরি করি। হয়তো আমার অফিস সেটা মানবে। কিন্তু যে মানুষটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন, তিনি তো চাকরি হারাবেন। কারণ প্রতিষ্ঠান তাকে বসিয়ে বসিয়ে বেতন-ভাতা দিতে চাইবে না। আর যারা দিন এনে দিন খায় বা ব্যবসা-বাণিজ্য করে সংসার চালান তাদের অবস্থা কী হবে? কয়দিন সিটি করপোরেশন ত্রাণসামগ্রী দেবে। এই ত্রাণ নিয়ে কী হয়েছে সেটা কিন্তু অতীতে সবাই দেখেছে। মানুষ ত্রাণের জন্য রাস্তায় নেমে এসেছে। এবার যাতে সেটা না হয় সেদিকে অবশ্যই সরকারকে নজর রাখতে হবে।’
জানতে চাইলে ভাড়াটিয়া পরিষদের সভাপতি বাহরানে সুলতান বাহার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই আমরা বিষয়টি বলে আসছি। লকডাউনে থাকা মানুষের আয়-রোজগারের ব্যবস্থা থাকে না। যখন খাবার জোগাড় করাই কঠিন, তখন ভাড়া কীভাবে দেবে? তাই লকডাউন থাকাকালে সরকারকে বাড়িভাড়া মওকুফের ব্যবস্থা করতে হবে।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান ইরান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘লকডাউন গাইডলাইন অনুযায়ী চাকরিজীবী হোক আর যেই হোক কেউই এই এলাকা থেকে বের হতে পারবেন না। দোকানপাটও বন্ধ থাকবে। যারা ভাসমান দোকানদার রয়েছেন তারাও থাকতে পারবেন না। রাস্তাঘাতে কোনও যান চলাচল করবে না। কারও যদি খাবার প্রয়োজন হয় আমরা সেটা সরবরাহ করবো। আমাদের প্রশিক্ষিত লোক থাকবে। নিয়মিত কর্মহীন মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করবো। বাসার ময়লাও আমরা নেবো। তারা বাসা থেকে বের হতে পারবেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসলে প্রথম ধাপে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এবার আর ব্যর্থ হওয়া যাবে না। যে করেই হোক এটাকে সফল করতে হবে।’
ডিএনসিসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পূর্ব রাজাবাজার এলাকার নাজনিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ডিএনসিসির ওয়ার্ড কাউন্সিলর, স্বাস্থ্য অধিদফতর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), এটুআই, ই-কমার্স অব বাংলাদেশ (ইক্যাব) এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিকে নিয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হবে। এলাকায় একটিমাত্র প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ (গ্রিন রোডে অবস্থিত আইবিএ হোস্টেলের পাশের সড়ক) খোলা থাকবে।
আরও পড়ুন: