সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়হীনতায় সড়ক ব্যবস্থাপনায় কাঙ্ক্ষিত ফল পাইনি: আছাদুজ্জামান মিয়া






আছাদুজ্জামান মিয়াসড়ক ব্যবস্থাপনায় জড়িত সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতায় কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটোরিয়ামে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ আয়োজিত ‘ঢাকা মহানগরীর বাস ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা আনতে গত পৌনে ৫ বছরে বাসমালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বার বার বৈঠক করেছি। সড়কে বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলো উত্তরণের উপায় খুঁজেছি আমরা। কিন্তু সেগুলোর উত্তরণ ঘটেনি। কারণ, বাসমালক-শ্রমিক এবং পুলিশের বাইরেও সিটি করপোরেশন, ওয়াসাসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা জড়িত রয়েছে। এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে রয়েছে। যে কারণে আমরা সড়ক ব্যবস্থাপনায় কাঙ্ক্ষিত ফল পাইনি।’
তিনি বলেন, রাজধানীর সড়কগুলোতে ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করা প্রয়োজন। তাহলেই সড়ক ব্যবস্থাপনায় অনেক পরিবর্তন চলে আসবে এবং সুফল আসতে থাকবে।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের একটি এলাকা খুবই দুর্ঘটনাপ্রবণ ছিল। রোড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে একটি বাঁক সোজা করে দেওয়া হয়। এর ফলে ৯৫ ভাগ দুর্ঘটনা কমে গেছে বলে জানান তিনি।
ডিএমপির এই কমিশনার বলেন, ‘ডিএমপি ঢাকার বাস টার্মিনালগুলো ডিপোতে পরিণত হয়ে গেছে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী বাস ডিপো থাকবে নগরীর বাইরে। বাস-বে না থাকায় বাসগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়েই যাত্রী ওঠা-নামা করাচ্ছে।’ এক্ষেত্রে হাজারো জরিমানা করেও পরিবর্তন আনা সম্ভব নয় বলে মত দেন তিনি।
তিনি জানান, ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ ১৬৭টা বাসস্ট্যান্ড চিহ্নিত করেছে। ফুটপাত দিয়ে যেন মোটরসাইকেল চলাচল করতে না পারে, সেজন্য মেটাল পিলার স্থাপন করা হয়েছে। অথচ এগুলো ডিএমপির কাজ নয়। এরপরও নিজ অর্থায়নে সেগুলো করা হয়েছে।
সড়কে ট্রাফিক সিগনাল ব্যবস্থা প্রসঙ্গে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যেখানে ট্রাফিক পুলিশ সড়কে হাত উঁচিয়ে গাড়ি চলাচলে সিগনাল দেয়। আমরা এখনও এই সিগনাল ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করতে পারিনি।’
সবার মধ্যেই আইন মানার সংস্কৃতি চালু করতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চালকরা মোবাইলে কথা বলার সময় গাড়ি চালাবেন। পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে গাড়ির সামনে লাফ দিয়ে রাস্তা পারাপার হবেন। শতকরা ৯৮ ভাগ মানুষই যদি আইন না মানে, তাহলে পুলিশ কেন, ফেরেশতা নেমে আসলেও আইন প্রয়োগ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, একটা দুর্ঘটনা হয় আর একটা আন্দোলন হয়। সড়ক নিরাপদ না করা গেলে জনগণের এই ক্ষোভ দমানো সম্ভব নয়। আর এই রোষানল থেকে কেউই রেহাই পাবে না। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সেখানকার ফুটেজ দেখে যদি পথচারীর গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে চালকের পাশাপাশি পথচারীকেও দায় নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অ্রনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মফিজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ।