রয়্যালটি নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের: শেরিফ আল সায়ার

শেরিফ আল সায়ার

রয়্যালটি ইস্যুটি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই বির্তক হচ্ছে উল্লেখ করে লেখক ও বাংলা ট্রিবিউনের গবেষণা বিভাগের প্রধান শেরিফ আল সায়ার বলেন, ‘রয়্যালটি নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। আমার সামনে দুজন লেখক আছেন, ৯০-এর দশক থেকে তারা লিখছেন, তারা প্রকাশকদের সঙ্গে তখন যে সমস্যার সম্মুখীন হতেন; আমিও আমার প্রথম বই প্রকাশিত হওয়ার সময় ২০১২ সালে এসে এই একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম।’

মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর পান্থপথে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন স্টুডিওতে আয়োজিত ‘রয়্যালটি: লেখক-প্রকাশক মুখোমুখি’ শীর্ষক বৈঠকিতে এসব কথা বলেছেন শেরিফ আল সায়ার।

সমস্যার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘প্রথম সমস্যা হচ্ছে- আমরা যখন প্রকাশকের কাছে একটি পাণ্ডুলিপি নিয়ে যাই, অধিকাংশ প্রকাশক সেই পাণ্ডুলিপিটি দেখার আগেই লেখককে প্রশ্ন করেন- ‘আপনার এই বইটি কত কপি বিক্রি হবে বলে মনে করেন?’ অর্থাৎ উনি কন্টেন্টের দিকে জোর কম দিচ্ছেন, বিক্রির দিকে জোর বেশি দিচ্ছেন।’’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘একজন লেখকের কাজ লেখা। কত কপি বই বিক্রি হবে– এই যে মার্কেট রিসার্চটা, এটা তো আসলে প্রকাশকের দায়িত্ব। একজন লেখকের বই কীভাবে বিক্রি হবে, কীভাবে বিপণন হবে, পুরো দায়িত্বটাই প্রকাশকের।’

রয়্যালটির বিষয়ে শেরিফ আল সায়ার বলেন, ‘‘রয়্যালটির বিষয়ে আমার সামনে যারা আছেন, তারাও কিন্তু তরুণ বয়সে বিব্রত হয়েছেন। কারণ লেখক কিন্তু কখনও নিজে থেকে রয়্যালটি চাইবেন না। এই যে না চাওয়ার জায়গাটা, এটা একটা অস্বস্তিকর ব্যাপার। গতকাল বাংলা ট্রিবিউনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে একজন প্রকাশক তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘প্রকাশকের সঙ্গে লেখক চুক্তি না করে বই প্রকাশ করলে সেটা লেখকের অপরাধ।’ আমি তাহলে সেই অপরাধে অপরাধী। আমি একজন অপরাধী হয়েও প্রকাশককে বই দিচ্ছি। কারণ আমি তো লিখতে চাই। সেটা যদি প্রকাশ না হয়, প্রকাশকের যদি আগ্রহ না থাকে, সেই জায়গায় আমি কী করবো? অধিকাংশ তরুণ লেখকের সঙ্গে চুক্তি হয় না। এটা হচ্ছে একটি বড় সমস্যা, যার কারণে লেখকদের সঙ্গে প্রকাশকের একটি গ্যাপ তৈরি হয়। যেহেতু চুক্তি হয় না, সেহেতু রয়্যালটির প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া যায় ।’’     

সাংবাদিক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় বৈঠকিতে আরও অংশ নিয়েছেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি) এর সহযোগী অধ্যাপক ও কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের (ইউপিএল) পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক ও ভাষাচিত্রের স্বত্বাধিকারী খন্দকার মনিরুল ইসলাম, লেখক ও সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ।

আরও খবর:

‘রয়্যালটি: লেখক-প্রকাশক মুখোমুখি’ শীর্ষক বৈঠকি চলছে

‘কারাগারের রোজনামচা’র জন্য ২০ শতাংশ রয়্যালটি দেওয়া হয়েছে: ড. শামসুজ্জামান খান

৮৫ শতাংশ বই প্রকাশ হয় ইমোশনালি: খন্দকার মনিরুল ইসলাম

রয়্যালটি লেখকের অধিকার, প্রকাশক দিতে বাধ্য: মাহরুখ মহিউদ্দিন

তরুণ লেখকদের সমস্যা তখনও ছিল, এখনও আছে: আহমাদ মোস্তফা কামাল

কপিরাইট অফিস লেখকদের ইস্যু নিয়ে খুবই আগ্রহী: মাহবুব মোর্শেদ