আজ থেকে ৩০ বছর আগে লেখক-প্রকাশকের মধ্যে যেই সমস্যাগুলো ছিল, সেগুলো এখনও সেরকমই আছে বলে জানিয়েছেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি)-এর সহযোগী অধ্যাপক ও কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘সবাই একসময় তরুণ থাকে। পরে একসময় লেখক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তরুণ লেখকদের সমস্যা তখনও ছিল, এখনও আছে। আজকে থেকে ৩০ বছর আগেও যেই সমস্যাগুলো দেখেছি, আজকেও সেগুলা থেকে গেছে। তবে খুব জনপ্রিয় লেখক যিনি, তিনি এই সমস্যার সম্মুখীন হন না। দেখা যায়, তার কাছে অগ্রিম টাকা দিয়ে পাণ্ডুলিপি নেওয়া হচ্ছে। যিনি জনপ্রিয় নন তার অভিজ্ঞতা ভিন্ন।’
মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর পান্থপথে অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউন স্টুডিওতে আয়োজিত ‘রয়্যালটি: লেখক-প্রকাশক মুখোমুখি’ শীর্ষক বৈঠকিতে এসব কথা বলেছেন আহমাদ মোস্তফা কামাল।
রয়্যালটির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘কোনও কোনও প্রকাশক চুক্তি করেন এবং বইয়ের হিসাব দেন, রয়্যালটি বুঝিয়ে দেন। আবার কোনও কোনও প্রকাশক চুক্তি করেন, বইয়ের হিসাব দেন না, রয়্যালটি ঠিক মতো দেন না। যখন যেটা ইচ্ছা হয়, সেটা দেন। কোনও হিসাব নেই। আবার কিছু প্রকাশক আছেন যারা চুক্তিও করেন না, রয়্যালটিও দেন না। আবার কেউ কেউ চুক্তি না করেও একটা থোক হিসেবে টাকা দেন। আমাদের প্রকাশনা জগত কোনও নিয়মের মধ্যেই নেই।’
লেখক-প্রকাশক সম্পর্কের ব্যাপারে আহমাদ মোস্তফা কামাল আরও বলেন, ‘লেখক-প্রকাশক যেই সম্পর্ক, সেটা হওয়ার কথা খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ। কারণ তারা পরষ্পরের ওপর নির্ভরশীল। লেখকের লেখা বন্ধ হয়ে গেলে, প্রকাশকরা পাণ্ডুলিপি পাবেন কোথায়? তারা টিকে থাকবেন কীভাবে? আবার, লেখকরা প্রচুর লিখছেন, কিন্তু কোনও প্রকাশক বই প্রকাশ করতে রাজি নন কিংবা করতে পারছেন না কোনও কারণে, তাহলে সেগুলো যাবে কোথায়? এই সম্পর্কটা বন্ধুত্বের এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা ৩০ বছর আগেও ছিল না, এখনও নেই। একই রকম রয়ে গেছে। সম্পর্কটা সবসময় অভিযোগের সম্পর্ক। লেখক বলছে- তাকে রয়্যালটি দেওয়া হচ্ছে না, তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে, এই হচ্ছে, সেই হচ্ছে। প্রকাশকরা বলছে- আমরা সবাই রয়্যালটি দেই, কিন্তু ঘটনা সত্য না, সবাই দেন না। একটা জগাখিচুড়ি অবস্থা আছে।’
সাংবাদিক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় বৈঠকিতে আরও অংশ নিয়েছেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের (ইউপিএল) পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক ও ভাষাচিত্রের স্বত্বাধিকারী খন্দকার মনিরুল ইসলাম, লেখক ও সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ, লেখক ও বাংলা ট্রিবিউনের গবেষণা বিভাগের প্রধান শেরিফ আল সায়ার।
আরও খবর:
‘রয়্যালটি: লেখক-প্রকাশক মুখোমুখি’ শীর্ষক বৈঠকি চলছে
‘কারাগারের রোজনামচা’র জন্য ২০ শতাংশ রয়্যালটি দেওয়া হয়েছে: ড. শামসুজ্জামান খান
৮৫ শতাংশ বই প্রকাশ হয় ইমোশনালি: খন্দকার মনিরুল ইসলাম
রয়্যালটি লেখকের অধিকার, প্রকাশক দিতে বাধ্য: মাহরুখ মহিউদ্দিন