‘সাংবাদিকতা থেকে রাজনীতি দূরে রাখা উচিত’

সাংবাদিকতা বিষয়ক সেশনে আলোচকরাসাংবাদিকতাকে হতে হবে নিরপেক্ষ। আর লেখালেখির ক্ষেত্রেও কোনও ধরনের বাধা থাকা উচিত নয়। শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে ‘ঢাকা লিট ফেস্ট ২০১৭’-এর শেষ দিনে আন্তর্জাতিক সংস্থা পেন-এর ব্যানারে লেখকের সীমাবদ্ধতা নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সেশনে এমন অভিমত জানান বক্তারা। এই সেশনে অংশ নেন আমেরিকান সাংবাদিক জন ম্যাকিন্সন, অ্যান্ড্রু ফিন্সটিন, জাস্টিন রোলেট ও জ্যোতি মালহোত্রা। সেশন সঞ্চালনা করেন সুদিপ চক্রবর্তী।

আলোচনায় জ্যোতি বলেন, ‘একজন সাংবাদিকের কখনোই রাজনৈতিক পরিচয় এবং কোনও দলের সঙ্গেও নিজেকে ভেড়ানো উচিত নয়। কোনও নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের বর্তমান অবস্থা জরুরি অবস্থার থেকেও ভয়াবহ। সেখানে রাজনীতিবিদরা আমাদের বলছে না যে তাদের দিকে ঝুঁকতে হবে, কিন্তু তারা আমাদের স্তব্ধ করে দিচ্ছে।’

সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘লেখালেখির ক্ষেত্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। লেখকদের ওপর একরকম প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে।’

জাস্টিন রোলেট তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘আমরা একবার একটি অভয়ারণ্যে প্রাণী নিধন নিয়ে প্রতিবেদন করেছিলাম। পরে আমাদের সেই পার্কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনটি কেন হয়? জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের ম্যাগাজিন প্রকাশ হচ্ছে। তারা তাদের মত প্রকাশ করছে ওয়েবসাইটে, কিন্তু আমরা কিছু লিখতে গেলে আমাদের থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’

অ্যান্ড্রু ফিন্সটিন বলেন, ‘আমাদের লিখতে গেলে পক্ষ নিতে বলা হয়। কিন্তু আমরা পিছুপা হই। জন ম্যাকিন্সন বলেন, ‘লেখালেখির ওপর সব দেশেই কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে। অনেক প্রকাশক চিন্তা করেন তারা বিরোধপূর্ণ লেখা ছাপাবে কিনা। কারণ এর সঙ্গে তার আর্থিক যোগসূত্র আছে।’

আলোচনা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক দর্শক প্রশ্ন করেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সিজার আজকে অনেকদিন ধরে নিখোঁজ। এ নিয়ে কেউ লিখছেনা বা আওয়াজ তুলছে না কেন। জ্যোতি মালহোত্রা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিষয়টি আমরাও শুনেছি। এরকম ঘটনা আমাদের দেশে প্রচুর হয়েছে। কিন্তু এসব ঘটনার কোনও সদুত্তর আমরা সরকারের কাছে পাইনি। শিক্ষক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক।’ সবার এ বিষয়ে আওয়াজ তোলা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।