পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শিক্ষা মানে শুধু ডিগ্রি অর্জন নয়— এটি সত্য, ন্যায় এবং পরিবেশ রক্ষার প্রতি একটি গভীর দায়বদ্ধতা। শিক্ষা যেন কেবল উপার্জনের উপায় না হয়ে ওঠে; বরং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে সমাজ বদল, দেশ গড়া এবং অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর হাতিয়ার হতে হবে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তৃতায় পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের উচিত নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে যুক্ত হওয়া। যেকোনও অবস্থায় সবার উপরে ন্যায়বিচার ও দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। জলাশয় ও বনভূমি দখল ঠেকাতে হবে, সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে— প্লাস্টিক দূষণ, শব্দদূষণ, বন উজাড় এবং জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে।
নারী ও পরিবেশ রক্ষার সংগ্রাম একে অপরের পরিপূরক মন্তব্য করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপর্যয়ে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন, অথচ তারাই সবচেয়ে কম দায়ী। এই ন্যায়ের প্রশ্নেই জলবায়ু সংগ্রাম এক নারীবাদী আন্দোলন।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরাই আগামীর নেতৃত্ব, তোমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তই এই পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে। আমরা সবাই উন্নয়ন চাই, তবে সেটা যেন প্রকৃতির ওপর সর্বনাশ ডেকে না আনে। এসো, আমরা প্রকৃতিকে যতটা সম্ভব কম বিরক্ত করি। তবেই প্রকৃতিও আমাদের ভালোবাসবে। শুধু চাকরি নয়, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য তোমাদের দায়িত্ব নিতে হবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণায় পরিবেশবান্ধব সমাধান উদ্ভাবনে উৎসাহিত করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ; সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান। অনুষ্ঠানে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান, সদস্যরা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন।