কাতার সফর অত্যন্ত সফল: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, কাতারে প্রধান উপদেষ্টার গত চারদিনের সফর অত্যন্ত সফল হয়েছে। চীন সফর যেই মাত্রায় হয়েছে—আমি সেই স্কেলে রাখবো এই সফর। কারণ, উনি (প্রধান উপদেষ্টা) এখানে আসার পর থেকে কাতারের এমন কোনও ব্যক্তি নেই যে যার সঙ্গে দেখা হয়নি। কাতারের আমির দেশের বাইরে থাকায় তার সঙ্গে দেখা হয়নি, কিন্তু কাতারের প্রধানমন্ত্রী, দুইজন উপপ্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, সিনিয়র অফিসিয়াল, কাতারের আমিরের মা—যিনি আরব দেশগুলোর সবচেয়ে প্রভাবশালী নারী, তার সঙ্গে দেখা করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) কাতারের দোহায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, আমাদের সফরের আরেকটা উল্লেখযোগ্য দিক ছিল—কাতারের যারা ব্যবসায়ী, তাদের কীভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানানো যায়। সেই লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা সিরিজ আকারে মিটিং করেছেন। এখানে যারা অনাবাসী বাংলাদেশি আছেন, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এছাড়া কাতারের সরকারের যেসব প্রতিষ্ঠানে বড় বড় ফান্ড আছে— যেমন স্পেসএক্স, টেসলা, তাদের কাছেও আহ্বান করা হয়েছে। তাদের কাছে বাংলাদেশকে নতুনভাবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলেছেন, এটা একটা নতুন বাংলাদেশ। এখানে সময় নষ্ট করার জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকবে না, এখানে এমনভাবে সংস্কার করা হচ্ছে, সব চ্যালেঞ্জ নিরসনে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলেছেন—বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং ও ইকোনমিক হাব বানাতে চান। এটা শুধু বাংলাদেশের জন্য না, এই পুরো অঞ্চলের জন্য। সেভেন সিস্টার, নেপাল, ভুটান মিলে ৩০ কোটি মানুষের একটা বড় মার্কেট এখানে।

প্রেস সচিব বলেন, আগে আমাদের ভয়াবহ গুমরানি বলবো নাকি, চোরজননী অর্থনীতি যেই জায়গায় রেখে গেছেন— কাতার থেকে আমরা এলএনজি আমদানি করি, তাদের প্রাপ্য ২৫৪ মিলিয়ন ডলার না দিয়ে চলে গেছে। আমরা পুরো টাকা পরিশোধ করে দিচ্ছি। কাতার এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে তাদের আয় থেকে লভ্যাংশ নিজেদের কাছে নিতে পারছে না। সেটাও আমরা সুযোগ করে দিয়েছি। এটা তো তারা বুঝেছে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, আমরা একটা সুস্থ জায়গায় নিচ্ছি। আমাদের ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার দেনা ছিল। সেখান থেকে দেনা শোধ করে আমরা ৬০০ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে এনেছি। সামনে কয়েক মাসের মধ্যে দেখবেন এটা শূন্যে নেমে এসেছে। এটা বহির্বিশ্বের কাছে একটা মেসেজ—আমরা প্রস্তুত আছি।

শফিকুল আলম জানান, আমরা খুব দ্রুত একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল করতে চাই। যাতে আমরা প্রচুর গ্যাস আনতে পারি। অনেক কোম্পানি আছে, বলছেন তারা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারছেন না, কারণ গ্যাস সংকট। আমরা চাচ্ছি খুব দ্রুত যেন এই সমস্যার অবসান হয়। কাতার এনার্জির সঙ্গে কথা হয়েছে, যাতে প্রচুর সংখ্যক নতুন কার্গো আনা যায়, যাতে আমাদের গার্মেন্টস সেক্টরে প্রচুর অর্ডার পাচ্ছে, সেগুলো সম্প্রসারণে আমরা গ্যাস দিতে পারি।