প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূতের সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূত ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন।

বুধবার (৯ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা শক্তিশালী করতে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বৃহত্তর সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা । বৈঠকে উভয় পক্ষই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং  ব্যারনেস উইন্টারটন দুই দেশের মধ্যে ‘দীর্ঘ ও বিশ্বস্ত ইতিহাস’ স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের একসঙ্গে দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং সংস্কারের দিক নির্দেশনা দেখে আমরা সন্তুষ্ট।’

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘দেশ একটি রূপান্তরিত সময় অতিক্রম করছে।’ তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই সংকটময় সময়। আমরা প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন ও অগ্রাধিকার পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করছি।’

বাংলাদেশে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের নার্সের অভাব রয়েছে। কিন্তু নার্সিং শুধু জাতীয় সমস্যা নয়, এটি একটি বৈশ্বিক প্রয়োজনীয়তা। আমরা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের জন্যও আরও নার্স তৈরি করতে চাই।’

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের স্বল্প সম্পদসমৃদ্ধ স্বাস্থ্য খাতকে শক্তিশালী করতে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য কর্মসূচিগুলো প্রায় অকার্যকর। এক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আরেকটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হলো ফার্মাসিউটিক্যালস। আমরা পেটেন্ট সুরক্ষা তুলে নেওয়ার পক্ষে পরামর্শ দিয়ে বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতাকে সমর্থন করার জন্য আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে প্রতিটি দেশ সামাজিক ব্যবসা মডেলের অধীনে সাশ্রয়ীভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারে।’

উভয় পক্ষ শিক্ষা, টেক্সটাইল শিল্প, প্রতিরক্ষা এবং বিমান চলাচলসহ কৌশলগত সহযোগিতার বিস্তৃত ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা করেন। 

প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, বস্ত্র খাতের আধুনিকায়ন এবং প্রতিরক্ষা ও বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র অনুসন্ধানে যুক্তরাজ্যের সমর্থনকে আমরা স্বাগত জানাই।’

উভয় পক্ষই এই ক্ষেত্রগুলোতে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি বিনিময় এবং দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারত্বের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

লিঙ্গ সমতার ওপর সরকারের গুরুত্বারোপ করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, ‘আমরা সবসময়ই প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। নারীর ক্ষমতায়ন আমাদের উন্নয়ন কৌশলের কেন্দ্রবিন্দু।’

ব্যারনেস উইন্টারটন বর্তমান সংস্কার এজেন্ডায় যুক্তরাজ্য সরকারের সমর্থন প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কার উদ্যোগের প্রধান আলী রীয়াজের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্রক্রিয়ার বিষয়ে একমত হলে ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে। তবে আরও বিস্তৃত সংস্কারের পথ বেছে নেওয়া হলে জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে।’

বৈঠকে বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।