কর্মকর্তাদের দুর্নীতির খবরে ‘ধন্যবাদ’ দিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ পুলিশের বড় কর্তাদের সম্পদ, কোরবানির ঈদে ‘ছাগলকাণ্ডের’ সূত্র ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্মকর্তাদের দুর্নীতির খবর নিয়ে সংবাদমাধ্যম এখন সরব। জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনেও এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেছেন সংসদ সদস্যরা। এবার এ বিষয়ে কথা বললেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনও।

আজ সোমবার (১ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক হয়। বিকালে সচিবালয়ে এ নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মো. মাহবুব হোসেন। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে যেসব সংবাদ বের হচ্ছে তা নিয়ে ধন্যবাদ জানাচ্ছি তাদের। তবে এর বাইরেও অনেক কর্মকর্তাকে দুর্নীতির জন্য সাজা পেতে হয়, সেটা গণমাধ্যমে আমরা দেই না। তাই সবাই জানেন না এ বিষয়ে।

দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিষয়ে সরকার ও প্রশাসনের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, একটা বিষয় পরিষ্কার যে দুর্নীতি সবাই করেন না। হাতে গোনা কিছু লোক করে। এর জন্য বাকিরা বিব্রত হন।

তিনি বলেন, সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে দুর্নীতিবাজদের কোনও সহানুভূতি দেখানো হবে না। প্রশাসন যন্ত্রসহ সরকারের সব যন্ত্র দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সহায়তা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, একটা প্রশ্ন আসতে পারে যে এরপরওতো দুর্নীতি হচ্ছে। তাহলে কেন হচ্ছে। বিষয় হলো এরকম সবখানেই হয়ে থাকে। অসৎ মানুষ তো সমাজে আছেই।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের নানানভাবে বিচার হয়। বিভাগীয়ভাবে হয়। শুধু আর্থিক দুর্নীতি নয়, শৃঙ্খলাজনিত, নৈতিক স্থলনজনিত ক্ষেত্রেও বিচার হয়। দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে, কিন্তু বিচার না করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এমন নজির নেই। ডিপার্টমেন্টের বাইরে দুর্নীতির বিচারের জন্য আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রমানযোগ্য দুর্নীতি থাকলে সেইসব প্রতিষ্ঠান অ্যাকশন নেয়।

দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার পরেও চাকরিতে বহাল থাকে এমন নজির রয়েছে। একজন সাংবাদিক এমন দুটি উদাহরণ দেওয়ার পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সবক্ষেত্রেই কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। দুর্নীতি দমন কমিশন, আদালত যেভাবে কাজ করে ডিপার্টমেন্ট সেভাবে করতে পারে না। ডিপার্টমেন্ট চাকরিতে বহাল রেখেই ব্যবস্থা নেয়। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে যে সময় লাগে, ততদিন তাকে চাকরিতে বহাল রাখতে হয়। হ্যাঁ, বলা যেতে পারে তাকে সাসপেন্ড কেন করা হয়নি। এ সিদ্ধান্তও বিধিবিধান অনুযায়ী নিতে হয়।

তিনি এসময় আরও জানান, সরকারি প্রকল্পের টাকা খরচ করে কর্মকর্তাদের বিদেশ যাওয়া শতকরা ৯০ ভাগ বন্ধ হয়েছে।