নরেন্দ্র মোদির সফরে কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হবে না

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আসাকে কেন্দ্র করে কোনও ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার (১০ মার্চ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গঠিত নিরাপত্তা বিষয়ক উপকমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও গোপন সংবাদ নেই। এই ধরনের পরিস্থিতি হবে কিনা আমরা ঠিক এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। আমরা মনে করি সবাই বাংলাদেশকে ভালোবাসে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে। আমাদের জাতির পিতার উৎসব অনুষ্ঠানে কেউ ডিস্টার্ব করবে বলে আমরা মনে করছি না। তারপরও এটা গণতান্ত্রিক দেশ। সবার বাকস্বাধীনতা রয়েছে। কে কী বললো, অনেক সময় অনেকে অনেক কিছুই বলে থাকেন। যার কোনও অর্থ হয় না। আমি মনে করি এ ধরনের কোনও পরিস্থিতি হবে না। জাতির পিতার উৎসব অনুষ্ঠান করার জন্য আমরা সবার সহযোগিতা চাই।’

১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে আগত রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানরা ঢাকার বাইরে যেসব অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বা পরিদর্শনে যাবেন সেসব স্থানে গোয়েন্দা নজরদারিসহ সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেজন্য ১৫ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত সব অনুষ্ঠান পালনে সব রাজনৈতিক দলসহ সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।’ এসময় অনুষ্ঠানস্থল, অতিথিদের যাতায়াত, হোটেলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বিদেশি মেহমানদের চলাচলের সময় যানজটের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ প্রধানসহ সবাই এ নিয়ে কাজ করবে। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে। কীভাবে যান চলাচল করবে, কোন রাস্তা কতক্ষণের জন্য বন্ধ থাকবে, সেগুলো সব কিছু জানিয়ে দেওয়া হবে।’

তিনি জানান, জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয়ের জন্য একটি কন্ট্রোল রুম থাকবে। যে কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে ৯৯৯ এর মাধ্যমে জরুরি সেবা দেওয়া হবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে একই অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এখন পর্যন্ত ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রপ্রধানদের আসার কথা রয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় বছরব্যাপী যেসব অনুষ্ঠান হবে, সেসব স্থানেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। করোনা সংক্রমণ রোধে সব অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনুরোধ করেন তিনি। 

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানের মুখ্য সমন্বয়ক কামাল আব্দুল নাসের জানান, পুরো অনুষ্ঠান সারা পৃথিবীতে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। তিনি বলেন, ‘একটি বড় আকারের প্রোগ্রাম। সবাই যাতে দেখতে পারে। অনুষ্ঠানে যেসব দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা আসবেন, সেই দিনগুলোতে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। সেসব দিনে বিভিন্ন সেক্টরের সর্বোচ্চ ৫০০ অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে সেজন্য যারা দাওয়াত পাবেন তাদের কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে। আমরা যাদের দাওয়াত দিচ্ছি তাদের বলে দিচ্ছি, কোভিড টেস্ট বাধ্যতামূলক। এই টেস্টের মেয়াদ থাকবে ৪৮ ঘণ্টা। ১০ দিনের প্রোগ্রামে চার দিন অতিথিরা সশরীরে উপস্থিত থাকবেন। বাকি ছয় দিন ভার্চুয়ালি হবে। অনেক দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে যুক্ত হবেন।’

অনুষ্ঠানে আইজিপিসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।