লন্ডন থেকে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে বঙ্গবন্ধুর ট্রাঙ্কল


ittefak

১৯৭২ সালের ২৭ জুলাই অস্ত্রোপচারের জন্য লন্ডন পৌঁছান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। লন্ডনে পৌঁছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির জন্য চিন্তিত প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টেলিফোনে অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে কথা বলেন। দেশের পরিস্থিতি জানার জন্য বঙ্গবন্ধু ট্রাঙ্কল করেন। সৈয়দ নজরুল বঙ্গবন্ধুকে জানান, দেশের সব কিছুই স্বাভাবিক ও ঠিকঠাক চলছে। জনসাধারণ তার প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় আছে। তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে কথা বলার সময় বঙ্গবন্ধু জানান, দুই দিনের মধ্যে তার অস্ত্রোপচার হতে পারে। বাসসের সংবাদে আরও বলা হয়, দূরপাল্লার টেলিফোনে কথা বলার সময় বঙ্গবন্ধু ব্যথা অনুভব করছিলেন। ১৯৭২ সালের ২৮ জুলাই প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকার খবরে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

ittefak 28

লন্ডনে বঙ্গবন্ধু চিকিৎসার জন্য একটি ক্লিনিকে ভর্তি হন এবং ব্রিটেনের রানির ব্যক্তিগত চিকিৎসক তার অপারেশন করবেন বলে জানানো হয়। পিত্তকোষের পাথর অপসারণের জন্য বঙ্গবন্ধুর দেহে অস্ত্রোপচার করা হবে। গতকাল লন্ডন বিমান বন্দরে ধর্মঘটের কারণে বঙ্গবন্ধুর পৌঁছাতে ১২ ঘণ্টা বিলম্ব হয়। এয়ার ইন্ডিয়ার একটা বিমানে লন্ডন পৌঁছানোর পরে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতরের স্টেট মিনিস্টার, বাংলাদেশের তৎকালীন হাই কমিশনার, ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার এবং ঊর্ধ্বতন ব্রিটিশ অফিসাররা বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান।

বঙ্গবন্ধুকে বিমানবন্দর হতে একটা অ্যাম্বুলেন্সে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। লন্ডন ক্লিনিক লন্ডনের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত একটি বিশ্ব বিখ্যাত প্রাইভেট হাসপাতাল। বাংলাদেশ হাইকমিশনের মুখপাত্র জানান, অস্ত্রোপচারের জন্য তারিখ নির্ধারিত হয়নি। তবে বঙ্গবন্ধুকে এখানে দশ দিন থাকতে হতে পারে এবং লন্ডনে সবমিলিয়ে তিন সপ্তাহ অবস্থান করতে হতে পারে।

বঙ্গবন্ধুকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু জিন্দাবাদ স্লোগান দেওয়া হয় এবং বঙ্গবন্ধু অ্যাম্বুলেন্সের দরজায় দেখা দেন।

 _dainik bangla 28july

হিথ্রো বিমানবন্দরে নেমে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান কোনও বিবৃতি দেননি। তিনি বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে চলে যান। এর আগে ঢাকা থেকে লন্ডনের পথে বোম্বাইতে সাময়িক বিরতির সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি শুভেচ্ছা বাণীতে বঙ্গবন্ধু বলেন, তার বিগত ভারত সফরকালে ভারতের জনগণ ও ভারত সরকারের আন্তরিকতা দেখিয়েছেন তা আজও অম্লান হয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী ভারতের জনগণ ও সরকারের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।

dainik bangla 

জাতিসংঘের সদস্যপদের জন্য আহ্বান

জাতিসংঘের বাংলাদেশের সদস্যপদ আবেদন সমর্থন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্য দেশের সরকার প্রধানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার পথে এই আবেদন জানান তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে ইতোমধ্যে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সরকারের নিকট পৌঁছে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর একটি পত্র তাদের প্রদান করেন। বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ আহ্বান সমর্থন করার জন্য তাদের নিকট আবেদন জানিয়েছেন বলে পত্রে নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ।