তিনি সমাজতন্ত্রের শত্রুদের রুখে দাঁড়াতে আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের শ্রমিক শ্রেণির প্রতি সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করে সমাজতন্ত্রের শত্রুদের মোকাবিলা করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘সমাজতন্ত্রের শত্রুরা সমাজতন্ত্রের লক্ষ্য অর্জনে বাধা ও জাতীয়করণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের অন্তরায় সৃষ্টি করতে চায়। এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণের আমূল পরিবর্তন ঘটাতে হবে। পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভূমিকা পালন করেছেন, এখন তাদের সেই ভূমিকা রাখলে চলবে না। তাদের অবশ্যই উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং সম্পদকে রক্ষা করতে হবে।’
মে দিবসের জনসভায় তিনি বলেন, ‘মনে রাখা দরকার, শিল্পোৎপাদনের সুফল সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে দিতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ চাষি ভাইদেরও এর সুফলের ভাগ দিতে হবে। জাতীয় স্বার্থের প্রতিকূল দাবি-দাওয়া পেশের মনোভাব ত্যাগ করা দরকার। কারণ, সমাজতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ছাড়া সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি কায়েম করা সম্ভব নয়।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমরা আর পুঁজিপতি প্রভুদের ভোগের জন্য সম্পদ উৎপাদন করতে যাচ্ছি না। এখন যা উৎপাদন হবে তা শ্রমিক-কৃষক ও বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণের জন্য।’
তিনি মে দিবস উপলক্ষে এই বক্তৃতায় আশ্বস্ত করে বলেন, ‘সরকার তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘শ্রমিকদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোই নয়, সরকারি প্রশাসন যন্ত্রকেও নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রয়োজন মেটানোর জন্য সরকারি কর্মচারীদের দৃষ্টিভঙ্গির মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন আছে।’ তিনি বলেন, উচ্চ ও নিম্ন বেতনভোগী কর্মচারীদের বেতনের বিরাট ব্যবধান কমানোর জন্য বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস করা হবে। সেজন্য সরকারি জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’ চাকরিরত কর্মচারীরা জাতীয় পুনর্গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘মিথ্যে প্রতিশ্রুতি তিনি দেবেন না। কোনও অঙ্গীকার করলে প্রাণের বিনিময়ে হলেও আমি তা পালনের চেষ্টা করি। অতীতেও তাই করেছি, কিন্তু আমার হাতে আলাদিনের-আশ্চর্য-প্রদীপ নেই যে, রাতে সব ঠিকঠাক করে ফেলবো।’