সারা দেশে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে মশাল মিছিল ও ঢাকা–আরিচা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১০ মার্চ) রাত ১০টায় ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে শেষ হয়। অপরদিকে আরেকটি মিছিল ফজিলাতুন্নেছা হল থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে এসে জড়ো হয়।
শহীদ মিনারে এসময় বক্তব্য দেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। এসময় বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আহসান ইমাম বলেন, কোনও বয়সী নারীই ধর্ষকের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। আমরা এই বাংলাদেশ দেখতে চাই না। আমরা নারীদের জন্য নিরাপদ দেশ চাই। ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে।
এসময় ফাইজা মেহজাবীন বলেন, বিগত ১৫ বছরে আমরা বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেখেছি। আমরা আর কতদিন এই সংস্কৃতি দেখবো। আমরা এই চব্বিশে এত রক্তের বিনিময়ে দেশে পেয়েছি। আমরা ধর্ষণমুক্ত দেশ চাই, নিপীড়নমুক্ত দেশ চাই।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা–আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেয়। রাত ১০টা ৫৫ মিনিট থেকে ১১টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।
এসময় ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের সহ–মুখপাত্র মালিহা নামলা বলেন, আজকে ধর্ষণের শিকার শিশুটির খবরটা যদি ভাইরাল না হতো, তাহলে কি তার চিকিৎসাও হতো? নাকি তার ধর্ষকের বিচারের দাবিতে আমরা এখানে থাকতাম? এরকম হাজার হাজার ধর্ষণের শিকার দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আছে, আমাদের আশপাশেই আছে। এই স্বাধীন বাংলাদেশে প্রশাসনকে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে যাতে নারী-শিশু কেউই কখনোই ধর্ষণের শিকার না হয়।
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিয়া রহমান অন্বেষা বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমরা বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে দেখেছি। এই অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে আমরা সেই একই ধরনের সংস্কৃতি দেখছি। শুধু ধর্ষণ নয়, নারীদের প্রতিনিয়ত হেনস্তা করা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বুলিং করা হচ্ছে। আমরা নারীদের জন্য নিরাপদ দেশ চাই।
ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের মুখপাত্র সাইয়েদ শাওলি বলেন, আমরা আজ এখানে দাঁড়িয়ে যে লাগাতার ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদ করছি। সেই প্রত্যেকটি ধর্ষণকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের শনাক্ত করতে হবে। আমরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিচ্ছি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই রাষ্ট্র অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনবে। যদি তা করা না হয়, তাহলে আমরা ধরে নেবো এই ইন্টেরিম সরকার পূর্বের স্বৈরাচারী সরকারের মতো নারীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।