জাহাঙ্গীরনগরের তিন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে, একজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে

ফল পুনর্মূল্যায়নসহ তিন দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন শুরু করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের তিন শিক্ষার্থী। রবিবার বিকাল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন তারা। সোমবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনশনরত আছেন। এরই মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অনশনরত তিন শিক্ষার্থী হলেন- আইন অনুষদ ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) মো. আসাদুজ্জামান, ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মালিহা হাসান মাইশা ও একই ব্যাচের রাফা রওনক। তাদের দাবিগুলো হলো- আইন অনুষদের ৪৯তম ব্যাচ থেকে ৫১তম ব্যাচের ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন, ভর্তি পরীক্ষায় আইন অনুষদের জন্য আগের মতো আলাদা ইউনিট করা এবং স্থায়ী ভবন বরাদ্দ করা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, অনশনে থাকা রাফা রওনকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অনশনে থাকা দুই শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্বতন্ত্র একাডেমিক ভবন, পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়ন নিয়ে আমরা আন্দোলন করে আসছি। রবিবার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আমাদের দাবি নিয়ে আশানুরূপ সিদ্ধান্ত না আসায় আমরা আমরণ অনশনে বসেছি।

অনশনরত শিক্ষার্থী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের তিন দফা দাবির মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় দাবি নিয়ে প্রশাসন এখন পর্যন্ত কোনও সদুত্তর না দেওয়ায় অনশন কর্মসূচি চলমান। দাবি না মানলে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শুরুর আগে আমরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেবো।’

আইন অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, তাদের বিভাগের দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রকাশিত ফলাফলে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে ফলাফল পুনর্মূল্যায়নসহ কয়েকটি দাবিতে গত আগস্টে আন্দোলন হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ অক্টোবর তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সম্প্রতি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। গতকাল বিকালে ওই তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচনা শুরু হলে তারা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর সভা শেষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের বিষয়ে মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হলেও লিখিত প্রতিশ্রুতির দাবিতে আমরণ অনশনে যান তিন শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আগের কোনও প্রশাসন আইন ও বিচার বিভাগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি, কিন্তু আমরা দেখছি। আশা করি, আজকের সিন্ডিকেট সভায় তাদের নিয়ে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে।’