ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ, দিলেন আল্টিমেটাম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লার হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মহুয়া চত্বর থেকে মিছিল শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে এসে মিছিলটি শেষ হয়।

মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। এ সময় বক্তারা এই হত্যাকাণ্ডকে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের চক্রান্ত হিসেবে উল্লেখ করে অবিলম্বে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল যে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। গত ১৫ ও ১৭ জুলাই সংগঠিত হামলার বিচারের জন্য কোনও পদক্ষেপ এখনও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিতে পারেনি। নতুন প্রশাসনের এই দুর্বলতার কারণেই এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে। সেই সঙ্গে হেঁটে পুলিশি হেফাজতে যাওয়ার পর কীভাবে মৃত্যু হলো তাও খতিয়ে দেখতে হবে। তার মৃত্যুতে কেউ লাভবান হবে কি না তাও খতিয়ে দেখতে হবে। গতকালের মারধরের ঘটনায় যারা জড়িত ছিল তারা কোন রাজনৈতিক ব্যানারের লোক তা আমরা জানি। যেসব রাজনৈতিক ব্যানারের লোক এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদেরকে আমরা প্রতিহত করবো। সেই সঙ্গে যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুর রশীদ জিতু বলেন, গতকালের ঘটনাটি সুপরিকল্পিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গোষ্ঠী তাদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য এই ধরনের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, গতকাল ছাত্রলীগের এক নেতাকে মারধর করা হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। শামীম মোল্লা আসলেই একজন সন্ত্রাসী ছিলেন। সে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেকের নাম উঠে এসেছে। সে আরও অনেকের নাম বলতে পারতো কিন্তু সে সেই সুযোগ পায় নাই। তার মৃত্যুতে কাদের লাভ হলো, কারা তাকে এই নৃশংসভাবে হত্যা করলো অবিলম্বে সেগুলো তদন্ত করে বের করতে হবে। আমাদের একজন সমন্বয়ককেও এই সময় লাঠি হাতে দেখা গেছে। অপরাধী যেই হোক সবারই বিচার করতে হবে।

উল্লেখ্য, গতকাল (১৮ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা গেট এলাকা থেকে শামীম মোল্লাকে ধরে মারধর শুরু করে। এরপর তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় তাকে হস্তান্তর করে। শিক্ষার্থীদের মারধর থেকে বাঁচাতে তাকে নিরাপত্তা অফিসে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। তবে সেখানে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তালা ভেঙে প্রবেশ করে তাকে কয়েক দফা মারধর করে। একপর্যায়ে পুলিশ এলে তাকে পুলিশ হস্তান্তর করা হয়। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম মৃত্যুবরণ করেন।