শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আন্দোলনে অচল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। ত্রিমুখী আন্দোলনে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের একাডেমিক ক্লাস-পরীক্ষা এবং দাফতরিক কার্যক্রম। পবিত্র ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষে রবিবার (৭ জুলাই) থেকে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার কথা ছিল।

সরকারের ‘প্রত্যয় স্কিম’ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের কার্যকর কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না হওয়ায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন কর্তৃক ঘোষিত সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

রবিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক লাউঞ্জ ‘মুখবন্ধ’তে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করে শিক্ষক সমিতি। এ সময় তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রত্যয় স্কিম চালু হলে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মানে ব্যাপক পতন ঘটবে। কার্যত এর শিকার হবে দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা, তারা বিদেশে বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে না। আমাদের আন্দোলন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। সরকারের উচিত হবে শিক্ষকদের দাবি মেনে নিয়ে ক্লাসে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন– শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুষার কান্তি সাহা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রিয়াদ হাসান, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তপন কুমার সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং দফতর প্রধানরা।

একই দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আন্তবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আহ্বানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের দাফতরিক কার্যক্রম থেকে বিরত থেকে পূর্বঘোষিত সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। 

রবিবার সকাল ৯টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে পঞ্চম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি শুরু করে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। অন্যদিকে, নিজ নিজ কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করেছে ডিরেক্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘যৌক্তিক দাবিতে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আমরা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মবিরতি চলমান থাকবে।’