রুম দখল নিয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৭

হলের রুম দখলকে কেন্দ্র করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১২ মে) বিকাল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুস সামাদ আজাদ হলে এই সংঘর্ষ বাঁধে। দুই দফা সংঘর্ষে অন্তত ১৭ জন আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

জানা গেছে, সিকৃবির আজাদ হলের একটি রুম (৫০৭ নং) দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা পড়ে ছিল। তখন এলটমেন্ট পাওয়া কিছু ছাত্রকে ওই রুমে তুলে দেন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি  রিয়াজুল ইসলাম রিয়াদ সমর্থিত গ্রুপের নেতাকর্মীরা। তবে সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসেন সমর্থিত গ্রুপের নেতাকর্মীরা এটা নিজেদের রুম বলে দাবি করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে।

পরে বিষয়টি সমাধানের জন্য ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালক, প্রক্টর, প্রভোস্ট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসেন। সেখানেও কথা কাটাকাটির জেরে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে মাঠে অবস্থান নেয় আরেক গ্রুপের (সহ-সভাপতি সাব্বির মোল্লা ও সাংগঠনিক সম্পাদক জুনায়েদ আহমেদ পক্ষের) নেতা কর্মীরা। পরে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

দুই দফা সংঘর্ষে ১৭ জন আহত হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সিকৃবির চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা. অসিম রঞ্জন রায়। তাদের মধ্যে দুজনকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে আব্দুস সামাদ আজাদ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মীর মো. ইকবাল হাসান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে একটি রুমকে নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছে। আমারা আহতদের দেখতে যাচ্ছি। আর ওই রুমটা আমরা তালা মেরে রেখেছি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজেরা বসে বিষয়টা সমাধান করবে বলে জানিয়েছে।’

ঘটনা সম্পর্কে জানতে সিকৃবি ছাত্রলীগ সভাপতি আশিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এমাদুল হোসেনকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি। এছাড়াও সহ-সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি ও সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসেনকেও সংযোগে পাওয়া যায়নি।

এ নিয়ে সিকৃবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাদ উদ্দিন মাহফুজ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে আব্দুস সামাদ আজাদ হলের একটি রুম নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ঝামেলা হয়, যার দরুন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। আমরা সবার সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কারা এ ঝামেলায় জড়িত খতিয়ে দেখা হচ্ছে, পরবর্তী সময়ে কোনও সমস্যা হলে প্রশাসন থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সিলেট শাহপরান থানার এসি শাহজাহান ভূঁইয়া রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশের ২০ জনের বেশি একটি টিম ক্যাম্পাসে পাঠানো হয়েছে। তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি। পুলিশ এখনও ক্যাম্পাসের আশেপাশে অবস্থান করছে।’

এর আগে গত শুক্রবার (১০ মে) রাতে ২২ মাস পর সিকৃবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার দুদিন না পেরোতেই সংঘর্ষে জড়ালো ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনটির দুটি গ্রুপ।