গাছ
যেখানেই পা রাখি সেখানেই শেকড় ছড়ায়
বসলেই উদ্যান আর হেলান দিলেই নিবিড় বনভূমি
মুখের সামনে কিছু চঞ্চল মুখ এসে কী যেন বলেটলে চলে যায়
হয়তো উঠতে বলে। হয়তো তাদেরকে অনুসরণ করে
পৌঁছানো যাবে কোনো বেদুইন গ্রামে
যেখানে সন্ধ্যা হলে আটে-চারে আয়ু বেড়ে যায়
কিন্তু আমার শরীরে যে অজস্র পাখির নিদ্রা পূর্ববর্তী কিচিরমিচির
আসন্ন অন্ধকারে তাদেরকে আশ্রয়হীন করে
আমি কি কোথাও যেতে পারি?
পৌষ সংক্রান্তি
তোমাকে ভাবতে গেলে পাঁজরের খুব কাছে
নিঃশব্দে জেগে ওঠে কৈশোরের শহরতলি—
জানুয়ারি দুপুরে অক্ষম প্রেমিকের মতো রোদ,
গলিতে ফেরিওয়ালার চিকন প্রলম্বিত হাঁক,
বখাটে কাকের দল গোধূলিতে আনাগোনা করে।
কেউ যেনো অদৃশ্য সুতোর টানে ওড়ায় এইসব
কিন্তু তার আয়ত্তের বাইরেই থেকে গেলে তুমি
জনহীন ছাদটাতে সুতো ছেঁড়া ঘুড়ির মতো
একফালি স্মৃতি হয়ে কতকাল ঝুলে আছো
চারণিক
‘খোলা আকাশের নিচে রেললাইন শুয়ে আছে জেগে
দুপুরেরা টান টান—কে জানে কীসের উদ্বেগে
এখানে জলের ধারে কতিপয় হিজলের বাস
বুড়ো ওরা—প্রতিবার শীত এলে উঠে যায় শ্বাস
গবাদির পদভারে কাদা জমে মেঠো রাস্তায়
ঘাটের মরারা তবু দল বেঁধে এ পথেই যায়’
‘আরও বলো, দেখেছো যা’, তাড়া দেয় শ্রোতারা সকল
অশ্বত্থের নিচে জড়ো হওয়া কানাদের দল
বক্তার মন নেই, নীরবতা বেড়ে শুধু চলে
সহসা উঠে দাঁড়ায়, বহুদূরে মন রেখে বলে—
‘বিপুল ঝড়ের মতো পাশ কেটে গেলে রেলগাড়ি
ধুলো পড়া চোখে আর কতদূরই তাকাতে বা পারি’