ফানা ও অন্যান্য কবিতা

ফানা

কোথাও কোনো শব্দ নেই। সারিবদ্ধ তারাদের

নতজানু আলো, দমকে দম জিকির

উঠেছেーহে অন্ধ আকাশ, হে ঘরহারা পাখি

ওহে মাতাল বাতাস, সালাতের নবম মুদ্রা

থেকে কেউ ছিটকে পড়ো না। পঞ্চম মুদ্রায়

যে সমুদ্র- পাগলপারা, সিনায় তার

মোহরানার ঢেউ। ঐ যে পৃথিবীর একফালি

দেয়াল, দেয়ালে সেঁটে আছে এক বন্ধ

দরজা, দরজার ওপাড়ে আয়না। সত্যের

প্রতিফলন থেকে খুব বেশি দূরে নও তুমি।

জিকির! সেতো নোঙর করা জাহাজ। যদি

সাঁতার ভুলে যাও, অন্ধ নাবিকের চোখে

তাকিও না। আরও ভারী, আরও গভীর

সময় থেকে তুলে আনো পর্দা।

পর্দা করো প্রিয় আত্মা। আসনে পেতে দাও

লাল গালিচা। দমে দমে তুলে আনো সমুদ্র,

যে তোমাকে পঞ্চম মুদ্রায় ফেলে গেছিল।

সম্মুখে সেই ছোট্ট দরজা, ওপাড়ে আয়না।

তুমি সত্য থেকে খুব বেশি দূরে নও।

চোখের পর্দা তুলে দাও। ঐ যে আরশ, শূন্য

সকল! ঐখানে পেতে দাও শেষ সম্বল।

সিলমোহর করিয়ে নাও তোমার কলব্।

দশম মুদ্রায় খুলে যাবে দরজা। যদি তুমি

অধিষ্ঠান করো তোমার রক্ত বিধৌত আরশ

কুরছিতে! চোখ খুলে দেখতে পাবেー

আয়নাটা তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।



দীর্ঘনিকায়ে

ফিরে আসার আগে যারা ডেকেছিল আজ

তারা মিছিলে... নিথর, সারিবদ্ধ অথচ দীর্ঘ

ওঙ্কার

গর্ভের গুণটানা দড়ি ছিঁড়ে যাবার পর রবের

হাতে যখন আর কোনো বন্ধন নেই,

খোদাই করা বুকে জড়িয়ে যাচ্ছিল নূহের

নৌকা। জিহ্বার নিচে এঁটে যাচ্ছিল লাম-

আলিফ আর মিছিলে জ্বলছিলো ক্রুশবিদ্ধ

মসিয়ের পূনর্জনম।



পরম

আততায়ী পাতার বোল

আততায়ী পাশে ঘুমাও

বাতাস ভারী আততায়ী

তুমি খালি পায় এসো

এসো রাত্রি নিবাসের কালে

এসো মিথ্যে কথার ছলে

ঝড়ের আগে ধানের দুধে

জিকিরের প্রথম ভাগে

ওঙ্কারে ঝঙ্কারে এসো আততায়ী

তুমি খালি পায় এসো।



মানুষ

মানুষー

তোমাকে জেনেছি প্রাচীন ছায়া

তোমার আঙুলে বাঁধা ঘুর্ণনের দড়ি

মৃত্তিকার ঠোঁটের প্রথম চুম্বন, তোমাকে

ডেকেছি মা

মানুষ, তুমি গর্ভে লুকিয়ে রেখেছ

আততায়ী

আমি যাকে ধরতে পারি না অঙ্কের

বিস্তারে

মানুষ

তোমাকে ভালোবেসে হারিয়েছি প্রিয়তমা,

যার বুক রেহেলে ঢাকা

বুকে খোদাই করে লিখে রাখা ছিল

ভবিষ্যৎ

গনণায় শূন্য গণিতের ব্যর্থতম দিবস

হিসেবে

মানুষ,

তোমাকে হারিয়েছি এক অসহায় বিদীর্ণ

মধ্যরাতে।