প্রশ্ন: আমার বয়স ৪৫ বছর। স্বামী, সংসার আর সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে চাকরি ছেড়েছিলাম অনেক বছর আগে। এখন হঠাৎ মনে হচ্ছে আমার তেমন কাজ নেই সংসারে। সন্তানরা বড় হয়ে গেছে। অথচ আমার নিজের কোনও বন্ধু নেই এখন, নিজের আলাদা কোনও পরিচয় নেই। স্বামী ব্যস্ত থাকে তার অফিস নিয়ে। বাসায় ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হয় তার। সন্তানরাও তাদের মতো পড়াশোনা, বন্ধু নিয়ে ব্যস্ত আছে। কেবল আমারই কোনও কাজ নেই। আজকাল খুব বিষণ্ণ লাগে। মনে হয় সংসারের জন্য চাকরি ছেড়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কী করবো?
উত্তর: জীবনের কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুশোচনা করার কিছু নেই। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যত তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন হয় ততটা কারো বিবেচনায় আনা কখনোই সম্ভব না। আমাদের জীবনে প্ল্যান মাফিক খুব কম জিনিসই বাস্তবায়িত হয়। তবে চাইলে যেকোনো বয়সেই নিজের সুপ্ত প্রতিভা খুঁজে বের করা সম্ভব।
১) নতুন কিছু শিখুন: আপনার আগ্রহের উপর ভিত্তি করে কিছু নতুন স্কিল শিখতে পারেন। অনলাইন কোর্স, বই পড়া, পেইন্টিং, লেখালেখি, রান্না, বাগান চর্চা বা অন্য কোনও হবি।
২) সামাজিক সংযোগ: পুরোনো বন্ধুদের সাথে সংযোগ স্থাপন করুন এবং নতুন ও আগ্রহ-উদ্দীপক যেকোনো কমিউনিটিতে যোগদান করুন।
৩) স্বেচ্ছাসেবা: বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এটি আপনাকে নতুন লোকের সঙ্গে পরিচয় করাবে এবং নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেবে।
৪) নিয়মিত ব্যায়াম: মানসিক স্বাস্থ্য ও শারীরিক সুস্থতার জন্য দৈনিক কিছুটা সময় ব্যায়াম করুন।
৫) মেডিটেশন: মেডিটেশন এবং নিঃশ্বাসের ব্যায়াম আপনার দেহমন সজীব রাখবে।
৬) প্রকৃতির সাথে মেলামেশা: প্রতিদিন কিছুক্ষণ খালি পায়ে মাটিতে বা ঘাসের উপর হাঁটুন বা পা ছুঁয়ে বিশ্রাম নিন।
প্রশ্ন: আমার বয়স ২১ বছর। এইচএসসির পর কোথাও ভর্তি হতে পারিনি। পাবলিকে চান্স পাইনি। প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি নেই পরিবারের। কোনও একটা কলেজে ভর্তি হয়ে যেতে পারতাম, কিন্তু মন সায় দেয়নি। বন্ধুরা সবাই ভালো ভালো জায়গায় পড়াশোনা করছে, আমার ভাগ্যটা এমন হলো কেন?
উত্তর: জীবন এবং জীবিকা সম্পর্কে যথাযথ ধারণা মানুষকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। জীবিকা নির্বাহ একটি সহজাত প্রবৃত্তি। অন্য কোনও প্রাণীর জীবিকা নির্বাহ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। মানুষের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কিন্তু নিজের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করার অভ্যাস আমরা শৈশব থেকেই রপ্ত করে ফেলি। লার্নড হেল্পলেসনেস এবং প্রতিযোগিতার মনোবৃত্তির কারণে আমরা প্রায়ই আমাদের প্যাশনকে পেশার সাথে সম্পৃক্ত করতে পারি না। সুতরাং কোনও কিছুর জন্য জোরাজুরি না করে প্রকৃতির ছন্দ ও স্রোতের সাথে গা ভাসিয়ে দিন। দেখবেন, আপনার জন্য সর্বোত্তম পেশাতেই আপনি নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন। নিজের সহজাত প্রতিভা বিকাশের জন্য নিচের পরামর্শগুলো অনুসরণ করুন।
১) দক্ষতা চিহ্নিত করুন: আপনার আগ্রহ এবং দক্ষতাগুলো চিহ্নিত করুন। আপনি কোন বিষয়ে আগ্রহী? কোন ক্ষেত্রে আপনার শক্তি বেশি? এগুলো জানলে আপনি ভবিষ্যতে কী করতে চান তা বুঝতে পারবেন।
২) ব্যক্তিগত উন্নয়ন: আপনার সময়টাকে ব্যবহার করে কোনও নতুন স্কিল শিখতে পারেন, যেমন প্রোগ্রামিং, ডিজিটাল মার্কেটিং বা অন্য যেকোনো কিছু যা আপনার আগ্রহের মধ্যে পড়ে।
৩) অনলাইন কোর্স: বর্তমানে অনেক সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রতিষ্ঠান অনলাইনে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে কোর্স প্রদান করে। এতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
৪) পেশাগত শিক্ষা: পেশাগত বা ভোকেশনাল কোর্স বা ট্রেনিং গ্রহণ করতে পারেন, যেগুলো আপনার কর্মজীবনে সহায়তা করতে পারে।
৫) স্বেচ্ছাসেবা: কোনও স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রমে যুক্ত হয়ে আপনার সময়টাকে গঠনমূলক কাজে ব্যবহার করতে পারেন, নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন এবং নতুন মানুষের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে পারেন। এটি আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করবে।