এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবীরা চার্জ গঠনের জন্য সময়ের আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সময় আবেদনের বিরোধীতা করে বলেন, ‘মামলাটি স্থগিতের আদেশ শেষ হয়ে গেছে। উচ্চ আদালত ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই চার্জ গঠন করা হোক।’ একইসঙ্গে খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় তাকে আদালতে হাজির করার জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করারও আবেদন করেন দুদকের এ আইনজীবী।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক চার্জ গঠন ও প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারির জন্য ১৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানান।
উল্লেখ্য, জরুরি বিধিমালা সংযুক্ত এ মামলার অভিযোগপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করে মামলা বাতিল চেয়ে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। রিট আবেদনের কারণে প্রায় ৮ বছর নিম্ন আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। রিট খারিজ করে উচ্চ আদালত ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দুই মাসের মধ্যে আত্মসমর্পনের নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আত্মসমর্পন করে জামিন পান খালেদা জিয়া।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০০৮ সালের ১৩ মে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ প্রাক্তন মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২৪ আসামির মধ্যে প্রাক্তন মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, প্রাক্তন মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী এবং খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো মারা গেছেন। মামলাটিতে বর্তমান আসামির সংখ্যা ২০ জন।
অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, এমকে আনোয়ার, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য একে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লি.(গ্যাটকো) এর পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন। আসামিদের মধ্যে সম্প্রতি এমকে আনোয়ার মারা গেছেন।