মীর কাসেমের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে

মীর কাসেম আলীমানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছেছে। এর আগে পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আইন অনুসারে বিচারিক আদালত ট্রাইব্যুনাল মৃত্যু পরোয়ানা পাঠানো হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে। এ পরোয়ানার ভিত্তিতে দেশের শীর্ষ এই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকরে পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করবে কারা কর্তৃপক্ষ।
সোমবার সন্ধ্যায় এ পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক এবং বিচারিক প্যানেলের দুই সদস্য বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী।
এর আগে দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়। রায়ের অনুলিপিসহ অন্য কাগজপত্র পাঠান সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম।
গত ৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর ফাঁসি বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত আকারে আপিল মামলার রায় দেন আপিল বিভাগ। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হলো আজ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেমকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর খালাস চেয়ে মীর কাসেম আলী আপিল করেন।

ট্রাইব্যুনালে আটজনকে নির্যাতনের পর হত্যা ও মরদেহ গুম এবং ২৪ জনকে অপহরণের পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন নির্যাতনকেন্দ্রে আটকে রেখে নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী ১৪টি অভিযোগে অভিযুক্ত হন বদর বাহিনীর তৃতীয় শীর্ষ নেতা ও ইসলামী ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক মীর কাসেম আলী। এ ১৪ অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয়। ফাঁসি ছাড়াও প্রমাণিত অন্য ৮টি অভিযোগে তার ৭২ বছরের কারাদণ্ড হয়।

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের এক নম্বর বেঞ্চে ৭ কার্যদিবসে এ শুনানি শেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের এ নেতার আপিল মামলার রায় দেওয়ার জন্য দিন ঠিক করেন ৮ মার্চ। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

৮ মার্চ মীর কাসেমের আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ৪, ৬ ও ১২ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়। আর ২, ৩, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগে আপিল নাকচ করে ট্রাইব্যুনালের রায়ই বহাল রাখা হয়।

এর আগে গত ১০ মে রাতে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় আলবদর বাহিনীর শীর্ষ নেতা জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী। গত বছর ফাঁসিতে ঝোলানো হয় একাত্তরে ‘মিরপুরের কসাই’ বলে পরিচিত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলের নৃশংস যুদ্ধাপরাধের হোতা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, আলবদর বাহিনীর প্রধান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলের নৃশংসতম যুদ্ধাপরাধের হোতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীকে।

আরও পড়ুন:

/ইউআই/এজে