জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ৪৩ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এখন আরও ৫২ জনকে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তাদের মধ্যে ৩১ জনকে পাঠানো হবে পাকিস্তানে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এ পর্যন্ত ৮০০ জনের বেশি শহীদের তালিকা করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের তালিকায় ১৪ হাজারের বেশি মানুষ রয়েছেন। তবে এই সংখ্যায় পরিবর্তন আসছে। প্রকৃত নিহত ও আহত ব্যক্তির তথ্য যাচাইয়ের কাজ এখনও চলমান।
তিনি বলেন, আহতদের প্রত্যেকের নামে স্বাস্থ্য কার্ড করা হচ্ছে। আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে তাদের।
পাকিস্তানে চিকিৎসার জন্য কেন পাঠানো হবে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য তিনি বলেন, পাকিস্তান একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। সেখানে মাইন বিস্ফোরণে আহতদের চিকিৎসায় তারা একটা প্রযুক্তি এনেছেন। ইউকে থেকে আমাদের এখানে একদল চিকিৎসক এসেছিল, তারা বললো যারা হাত-পা হারিয়েছে তাদের লাহোরে পাঠানো যেতে পারে।
নূরজাহান বেগম বলেন, সম্ভবত লাহোরে একটা বিশেষায়িত হাসপাতাল আছে, সেখানে এ ধরনের রোগীদের অনেক ভালো চিকিৎসা হয় বলে ইউকের ওই চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলছি।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪০ জনকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৬ জন ব্যাংকক, ১৩ জন সিঙ্গাপুর এবং একজন রাশিয়ায় গেছেন। চিকিৎসা শেষে ২৬ জন দেশে ফিরে এসেছেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানান, আমরা চিকিৎসার জন্য অর্থছাড়ে কোনও কার্পণ্য করিনি। আন্দোলনে আহতদের মধ্যে শিশু মুসার চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
আহতদের চিকিৎসায় সরকার প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় ১৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসায় কোনও কার্পণ্য করা হয়নি। অর্থ নয়, প্রাধান্য পেয়েছে চিকিৎসা।
আহত ও নিহতদের তালিকা প্রণয়নে সময় লাগছে বলে স্বীকার করেন উপদেষ্টা। তবে তিনি এটিকে সচেতন সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে বলেন, আমরা চাই না তালিকায় ভুয়া কেউ ঢুকে পড়ুক। যেভাবে এখনও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ধরা পড়ছে, সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে আমরা যাচাই-বাছাই করছি।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান জানান, জেলা কমিটির মাধ্যমে তালিকা তৈরি হচ্ছে। এখনও কিছু আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।