স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেছেন, জেনেরিক (ওষুধের মূল উপাদানের নাম) নামের ওপর পৃথিবীর সব জায়গায় ওষুধের দাম নির্ধারিত হয়। আমরাও করতে পারতাম। কিন্তু সমস্যা হলো, ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো এটাকে খুব সহজভাবে নিচ্ছে না। বুঝতে পারলাম, এটা করতে গেলে নতুন করে একটা সমস্যা সৃষ্টি হবে। এই মুহূর্তে নতুন সমস্যা সৃষ্টি করতে চাচ্ছি না।
সোমবার (৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ওষুধের দাম নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। জেনেরিক নামের ওপর দাম নির্ধারণ করে দেওয়া গেলে ওষুধের দাম অনেক কমে যেত। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি সেটা করতে পারবো না।’
স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর কিছু অঘটন ঘটে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ডাক্তারদের ওপর হামলা হয়। তারপর তারা কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের জন্য আট দিন সময় দেওয়া হয়। ২০১৪ সাল থেকে যে কাজ শুরু হলো, সেটি করার জন্য আট দিন সময় বেঁধে দেওয়া হলো। আমি কিন্তু সেদিন থেকেই সবাইকে নিয়ে তৎপর হলাম, স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের কাজে। আইনের খসড়ার ওপর অনেকের মতামত নেওয়া হয়। এটা মোটামুটি পাকা হয়ে গেছে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের একটি খসড়া করা হয়েছে। এটি চূড়ান্ত পর্যায়ে ক্যাবিনেটে উপস্থাপন করার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি, চিকিৎসকদের একটি বড় গ্রুপ কিংবা স্টেকহোল্ডারদের একটি অংশ, যারা গত ৫ আগস্টের আগে এই আইন দেখার সুযোগ পাননি এবং কোনও মতামত দেওয়ার সুযোগ পাননি; তারা আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের একটা দাবি ছিল, এই বিষয়গুলো যেন তাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়। আমরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে খসড়া শেয়ার করেছি। তাদের মতামত পেলে খুব বেশি সময় লাগবে না। এই সপ্তাহের মধ্যে আমরা চূড়ান্ত করে দিতে পারবো। তারপর পরবর্তী ধাপে আইন পাসের প্রক্রিয়ার দিকে যাবো।’
এর আগে ডেঙ্গু প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ডেঙ্গুবাড়ছে। আমাদের সব হাসপাতালকে এলার্ট করা আছে। তাদের যেসব সুবিধা কিংবা বেড দরকার সেগুলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত ১৮৬ জন মারা গেছেন ডেঙ্গুতে। গত বছর এই সময়ে এ সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। এ বছর রোগী এবং মৃত্যুর হার দুটোই কম। আমরা চেষ্টা করছি, রোগীদের সচেতনতা যেন বাড়ে। সবার সঙ্গে কথা বলছি। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা চেষ্টা করছি।’