‘মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’

মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা। তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং জনসংখ্যা ও উন্নয়ন কর্মসূচি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত ‘‘প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন’’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সারা দেশের সব মা ও শিশুর স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

বুধবার (১ মে) জাতিসংঘ সদর দফতরে জনসংখ্যা ও উন্নয়ন কমিশনের ৫৭তম অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে তিনি এ সব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং কৈশোর স্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫ হাজার ৫০০টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র স্থাপন করেছি। সার্বক্ষণিক পরিষেবা দিতে প্রতিটি কেন্দ্রে চার জন করে ধাত্রী নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে ২০ হাজার ধাত্রী নিয়োগ সম্ভব হবে বলে আশা করছি।’

বাংলাদেশে জাতীয় কৈশোর স্বাস্থ্যবিষয়ক কৌশলপত্র (২০১৭-২০৩০) এবং এর বাস্তবায়নে গৃহীত জাতীয় কর্মপরিকল্পনার বিষয়টি উল্লেখ করেন ডা. রোকেয়া সুলতানা। তিনি বলেন, ‘আমরা বাল্যবিয়ে এবং নারী ও কন্যা শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে কাজ করে যাচ্ছি। এ ছাড়া ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত প্রায় ৫ মিলিয়ন কিশোরীকে সরকার বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী মাতৃমৃত্যু ও জন্মহার হ্রাস, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন। তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতার ঘাটতি মেটাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান।

মূল অধিবেশনের সাইড লাইনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের মাতৃমৃত্যু বিষয়ক সিগনেচার সাইড ইভেন্টে অংশ নেন প্রতিমন্ত্রী। সেখানে তিনি দেশের প্রতিটি প্রান্তে পর্যাপ্ত ও প্রশিক্ষিত ধাত্রী নিয়োগের মাধ্যমে মাতৃমৃত্যু হ্রাসে বাংলাদেশের সাফল্য বর্ণনা করেন। এছাড়াও তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এবং পার্টনার্স ইন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি) আয়োজিত জনসংখ্যা ও উন্নয়ন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন (আইসিপিডি) কর্মসূচি বাস্তবায়নে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার গুরুত্ব বিষয়ক আরেকটি সাইড ইভেন্টে অংশ নেন। এ সব আয়োজনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের ভাইস মিনিস্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ও ইউএনএফপিএ’র এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিনিধির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। নেদারল্যান্ডসের ভাইস মিনিস্টার আয়োজিত ‘আইসিপিডি-৩০ গ্লোবাল ডায়ালগ’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন।

২৯ এপ্রিল শুরু হওয়া জনসংখ্যা ও উন্নয়ন কমিশনের ৫৭তম অধিবেশন আগামী ৩ মে শেষ হবে। এরপর আইসিপিডি প্রোগ্রাম অব অ্যাকশনের ৩০তম বার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আগামী ১৫-১৬ মে ঢাকায় ডেমোগ্রাফিক ডাইভার্সিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে।