বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তদন্তের আগেই চিকিৎসকদের ফৌজদারি আইনে আটক বা গ্রেফতার করলে দেশের স্বাস্থ্য খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর ফলে ব্যাহত হতে পারে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম।
বুধবার (১২ জুলাই) বিএসএমএমইউতে ‘গর্ভাবস্থায় ও প্রসবকালীন জটিলতা কীভাবে কমিয়ে আনা যায়?’ শীর্ষক মাসিক সেন্ট্রাল সেমিনারে তিনি একথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সাবকমিটি এই সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিউলী চৌধুরী ও ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দা সাঈদা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, তদন্তের পর কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে তার বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু তার পূর্বেই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত নয়। এতে রোগীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কারণ তখন রোগীদের জরুরি চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকরা মামলা/গ্রেফতারের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জরুরি চিকিৎসাসেবা দানের ক্ষেত্রে তাদের মাঝে এক ধরণের অনীহা কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক।
সেন্ট্রাল হাসপাতালের ওই ঘটনা অনেকটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এসময় উপাচার্য চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন আপগ্রেড রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রসূতি মায়েদের সেবা নিশ্চিত করার জন্য মিডওয়াইফদের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও জরুরি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রশিক্ষণ দিতে প্রস্তুত রয়েছে। সারা দেশে সিজারিয়ান অপারেশনকে একটি নির্দিষ্ট প্রটোকল ও সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। গর্ভবতী মা ও তার সন্তানের অবস্থা বুঝে চিকিৎসক সিদ্ধান্ত দেবেন যে সিজার করা হবে না নর্মাল ডেলিভারি হবে। আগেভাগে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
সেমিনারে কি-নোট স্পিকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মা ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিউলী চৌধুরী মিডওয়াইফদের সংখ্যা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করা, প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিশ্চিত করা, যথাযথ রেফারেল সিস্টেম গড়ে তোলা, সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন। অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল সাবকমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেগম নাসরীন, অধ্যাপক ডা. তৃপ্তি রানী দাশ প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল সাবকমিটির সদস্য সচিব নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ (সবুজ) ও রেসপাইরেটোরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম।
সেমিনারে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, অধ্যাপকরা, চিকিৎসক, রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।