দেশে জরায়ু-মুখ ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের জরায়ু-মুখ ক্যান্সারে আক্রান্তের হার ৮০ শতাংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে; যার সর্বশেষ সংযোজন এইচপিভি পরীক্ষা। ‘জাতীয় জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার নির্ণয় এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ একটি পাইলট প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশে স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যম হিসেবে এইচপিভি পরীক্ষা প্রচলনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য গবেষণার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই লক্ষ্যে মানিকগঞ্জের সিংগাইর এবং নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলাকে পাইলট এরিয়া হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।
রবিবার (২৫ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাইলট এরিয়ায় বসবাসরত প্রায় ২০ হাজার নারীর নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষা করা হবে। বর্তমানে ভায়া নেগেটিভ নারীদের আবারও ৫ বছর পর স্ক্রিনিং করতে হয়। কিন্তু এইচপিভি নেগেটিভ নারীদের ১০ বছরে জরায়ু মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।
এই গবেষণা প্রোগ্রামের উদ্বোধন ঘোষণার লক্ষ্যে শনিবার (২৪ জুন) মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রাঙ্গণে একটি উদ্বোধনী কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এই কার্যক্রমের সভাপতিত্ব করেন মানিকগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ।
এছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রসাশন) একেএম নূরুন্নবী কবির, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, যুগ্ম সচিব (গবেষণা ও উন্নয়ন) মো. আব্দুস সালাম খান, অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, প্রো-ভিসি (উন্নয়ন), বিএসএমএমইউ, অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, প্রো-ভিসি (শিক্ষা), বিএসএমএমইউ, ডা. মো. নিজাম উদ্দিন, লাইন ডাইরেক্টর (এমএনসিএন্ডএএইচ), স্বাস্থ্য অধিদফতর, ডা. মাখদুমা নার্গিস, সহ-সভাপতি, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টি বোর্ড উপস্থিত ছিলেন। আরও ছিলেন সম্মানিত অতিথি হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টি বোর্ডের জাতীয় সমন্বয়ক শাহানা পারভীন।
উদ্বোধনী কর্মশালায় জরায়ু-মুখ ক্যান্সারের প্রকটতা, এই ক্যান্সার নির্মূলে বর্তমান কার্যক্রমের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক আশরাফুন্নেসা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার নারী আক্রান্ত হয় স্তন ক্যান্সারে ও জরায়ু-মুখ ক্যান্সারে প্রায় ৯ হাজার নারী। প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত না হওয়ায় প্রতিবছর প্রায় ১২ হাজার নারী এই দুই ক্যান্সারে মারা যাচ্ছেন। এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং কর্মসূচি সেবা সম্প্রসারিত করেছেন।