রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর,সতর্কভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে রাশিয়া। বুধবার (৬ নভেম্বর) ক্রেমলিন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র এখনও একটি শত্রু দেশ। কেবল সময়ই বলবে ট্রাম্পের ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার ভাষণ বাস্তবে পরিণত হবে কিনা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেস্কভ বলেছেন, ট্রাম্প তার প্রচারণার সময় ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার ইচ্ছা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। কিন্তু কেবল সময়ই বলবে সেগুলো বাস্তবে পরিণত হবে কি না।
পেস্কভ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ভুলে যাব না যে, এখানে একটি শত্রু দেশের কথা বলা হচ্ছে, যা আমাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে যুদ্ধ করছে।
পেস্কভ আরও জানান, ‘আমরা বারবার বলেছি যে, যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘর্ষের সমাপ্তিতে অবদান রাখতে পারে। এটি এক রাতে হতে পারে না, তবে যুক্তরাষ্ট্র তার পররাষ্ট্র নীতির পথ বদলাতে সক্ষম। এটি ঘটবে কি না এবং ঘটলে কিভাবে; আমরা তা জানুয়ারি মাসে (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথের পর) দেখতে পাব।’
নির্বাচনের আগে পুতিনসহ রুশ কর্মকর্তারা বলেছিলেন, মস্কোর জন্য হোয়াইট হাউজ কে জিতেছে তা কোনও ব্যাপার নয়। যদিও ক্রেমলিনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়া নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করবে যখন তা হোয়াইট হাউজ রাশিয়ার জাতীয় স্বার্থ কঠোরভাবে রক্ষা করবে এবং ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান সফল করতে সমস্ত লক্ষ্য অর্জনের দিকে মনোযোগী থাকবে।
মন্ত্রণালয় বলেছে, আমাদের শর্ত অপরিবর্তিত এবং ওয়াশিংটন তা ভালোভাবেই জানে।
তবে রাশিয়ার সোভেরেন ওয়েলথ ফান্ডের প্রভাবশালী প্রধান কিরিল দমিত্রিয়েভ নরম সুরে বলেছেন, ট্রাম্পের বিজয় সম্পর্কগুলো পুনরুদ্ধার করার একটি সুযোগও হতে পারে।
গোল্ডম্যান সাচসের ব্যাংকার ছিলেন এবং ট্রাম্প টিমের সাথে যোগাযোগ রেখেছিলেন কিরিল দমিত্রিয়েভ।
ইউক্রেন যুদ্ধ
৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করবেন। যদিও তিনি কীভাবে তা করবেন তা স্পষ্ট করেননি।
পুতিন বলেছেন, তিনি আলোচনা করতে প্রস্তুত, তবে রাশিয়ার আঞ্চলিক লাভ এবং দাবিগুলি মেনে নিতে হবে, যা ইউক্রেনের নেতৃত্ব একে অগ্রহণযোগ্য আত্মসমর্পণ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
রুশ বাহিনী গত এক বছরে সর্বোচ্চ গতিতে ইউক্রেনে অগ্রসর হচ্ছে এবং দেশের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ করছে।
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বুধবার বলেছেন, ট্রাম্পের জয় সম্ভবত ইউক্রেনের জন্য খারাপ খবর। কারণ ট্রাম্প একজন ব্যবসায়ী। আর ট্রাম্পের এই বিষয়টিই হয়তো রাশিয়ানদের পক্ষে যাবে। ট্রাম্প ঝামেলাযুক্ত ব্যয় অপছন্দ করেন। আর ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় সবচেয়ে বেশি।